ওয়াশিংটনের রাজপথে এটি ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ। আন্দোলনকারীদের চাপে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় রাজপথ। দোকানপাট বন্ধ রাখেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
এ সময় ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’, ‘জর্জ ফ্লয়েড’, ‘আমাদের ঘাড় থেকে তোমাদের হাঁটু সরাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে পানি, স্ন্যাকস এবং পেপার টাওয়েল তুলে দিতে দেখা যায় স্বেচ্ছাসেবীদের।
বিক্ষোভের তীব্রতায় ওয়াশিংটনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বেশিরভাগ জায়গা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। উত্তাল বিক্ষোভের মুখে হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়।
এদিকে রাজধানী শহরে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে অ্যাক্টিভিস্টদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন থেকে সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শহরটির মেয়র।
ফ্লয়েডের আইনজীবী বেঞ্জামিন ক্রাম্প বলেন, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া বর্ণবাদজনিত মহামারির বলি হয়েছেন তার মক্কেল। নাগরিক অধিকার আন্দোলনের কর্মী রেভ আল শার্পটন বলেন, ফ্লয়েডের এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের সব কৃষ্ণাঙ্গকেই প্রতিধ্বনিত করছে।
তার ভাষায়, ‘ফ্লয়েডের সঙ্গে যা হয়েছে তা এদেশে প্রতিদিন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ আমেরিকান জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই ঘটে। এখন আমাদের উঠে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। আমাদের ঘাড় থেকে আপনাদের হাঁটু সরান; এ কথা বলার সময় এসেছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের পুরো বিচার ব্যবস্থায় পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান শার্পটন।
ফ্লয়েডের আইনজীবী বলেন, ‘করোনা মহামারিতে ফ্লয়েড জীবন হারাননি। এটি অন্য এক মহামারি। বর্ণবাদ ও বৈষম্যের মহামারি তার জীবন কেড়ে নিয়েছে।’
২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনিয়াপলিসে পুলিশি হেফাজতে হত্যার শিকার হন জর্জ ফ্লয়েড। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ১০ মিনিটের ভিডিওতে দেখা গেছে, হাঁটু দিয়ে নিরস্ত্র ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ডেরেক চাওভিন নামের এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য।
এই হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে, এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বড় ধরনের একাধিক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কানাডার অটোয়ায় পার্লামেন্ট হিলের বিক্ষোভে কালো মাস্ক পরে হাজির হন দেশটির প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো। এ সময় তিনি মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।