সোমবার (৮ জুন) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ বিকল্প বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।
‘করোনার (কোভিড-১৯) মহাবিপর্যয় থেকে মুক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা’ শিরোনামে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সমিতির সহ-সভাপতি জেড এম সালেহর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক জামালউদ্দিন আহমেদ।
সমিতির সভাপতি আবুল বারকাত বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরার সময় বলেন, ‘আমরা মনে করি না বাজেট সংকোচনমূলক হওয়া উচিত। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সম্প্রসারণমূলক বাজেটের কোনো বিকল্প নেই। প্রশ্ন হতে পারে, অপেক্ষাকৃত বড় বাজেটের আয় কোথা থেকে আসবে? ব্যয় করার সক্ষমতাও তো তেমন নেই। আমরা মনে করি, আয় কোনো সমস্যা নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছি, যা বর্তমান সরকারের যে বাজেট চলছে তার তুলনায় ২ দশমিক ৪৭ গুণ বেশি। এটা জিডিপির প্রায় ৫৫ শতাংশ।’
আবুল বারকাত বলেন, আমাদের এ বিকল্প বাজেটের রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১২ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট বাজেটের প্রায় ৯১ শতাংশ জোগান দেবে রাজস্ব খাত।
বাজেটের ঘাটতি এক লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ঘাটতি মেটাতে আমরা ব্যাংক ঋণ নেব না। সেই সঙ্গে কোনো বৈদেশি ঋণ নেব না। কারণ ব্যাংক ঋণ সরকারের জন্য নয়। ঘাটতি পূরণ হবে বন্ড বাজার, পুরাতন সঞ্চয়পত্র ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে নতুন সঞ্চয়পত্র- এই তিন পথে।’
‘এর মধ্যে বন্ড বাজার থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা আনা সম্ভব, যা ঘাটতির প্রায় ৫২ ভাগ পূরণ করতে পারে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা আসতে পারে। একটা নতুন সরকারি-বেসরকরি অংশীদারত্বের সঞ্চয়পত্র থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা আসতে পারে’, বলেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি।
মহামারি করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য প্রয়োজনে সীমিত আকারে টাকা ছাপানোরও পরামর্শ দেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, অনেকেই টাকা ছাপানোর বিপক্ষে থাকবেন। তবে প্রয়োজন হলে পরিমিত নতুন টাকা ছাপানো যেতে পারে। অবশ্য সেটা বেশি হওয়া যাবে না।
অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান আবুল বারকাত।
তিনি বলেন, প্রবীণ হিতৈষী বিভাগের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে। শিক্ষাখাতে জিডিপির ৫ শতাংশের সমান বরাদ্দ দিতে হবে। স্বাস্থ্যখাতে নতুন করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগ করে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে।