বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলো গত জানুয়ারি মাসের চেয়ে ফেব্রুয়ারিতে বেশি পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে। ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে ঋণ বিতরণ বেড়েছে আরও বেশি। একইভাবে মার্চের চেয়ে এপ্রিলে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত এপ্রিল মাসে ব্যাংকগুলো থেকে ব্যবসায়ীরা ৮ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। অথচ এপ্রিল মাসজুড়েই অর্থনীতিতে স্থবিরতা দেখা যায়। গত মার্চ মাসে ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করেছে ৭ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি মাসে বিতরণ করেছে ৬ হাজার ৪২৬ কোটি টাকার ঋণ। আর ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানত (এডিআর) সমন্বয়ের কারণে গত জানুয়ারি মাসে কোনও ঋণই বিতরণ করতে পারেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের শেষ মাস অর্থাৎ ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পুঞ্জিভূত পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৫৩ হাজার ১৫১ কোটি টাকা। ২০২০ সালের প্রথম মাস অর্থাৎ জানুয়ারিতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ১০ লাখ ৫২ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই মাসে কোনও ঋণ বিতরণ করেনি ব্যাংকগুলো। বরং, ঋণ আদায় হয়ে সমন্বয় হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। মার্চে এই সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা এবং এপ্রিল মাসে বিতরণ করা ঋণের পুঞ্জিভূত পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৭৫ হাজার ১১০ কোটি টাকা।
তবে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি এপ্রিলে ৯ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এই প্রবৃদ্ধি গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৮২ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ গত এপ্রিলের শেষে বেসরকারি খাতে একবছর আগের চেয়ে ঋণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। আর ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।
আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে এই ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয় ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। জানুয়ারিতে অবশ্য তা বাড়িয়ে ৫৬ শতাংশ করা হয়। কিন্তু এপ্রিলের শেষে সেটাও ছাড়িয়ে ৭৪ দশমিক ৫৫ শতাংশে উঠেছে।
অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই ব্যাংক ঋণ বাড়ছে।