ইউরোপ করোনা সংকট আপাতত কিছুটা সামলে নিলেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই মহামারি এখনও মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে। পরিস্থিতি সামলাতে এখনও কোনও ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এরইমধ্যে পরবর্তী মহামারির প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছেন ছয় ইউরোপীয় দেশের নেতারা।
করোনা সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রস্তুতি যথেষ্ট জোরদার ছিল না। এ কথা কার্যত মেনে নিয়ে তারা ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি সামলাতে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে চান। এজন্য তারা ইইউ পর্যায়ে জোরালো প্রস্তুতির ডাক দিয়েছেন।
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনকে লেখা এক যৌথ চিঠিতে মহামারি মোকাবিলার প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও সক্রিয় ভূমিকার দাবি করেছে ছয় দেশ।
করোনা মহামারির প্রথম পর্যায়ে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো মরিয়া হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। সীমান্ত বন্ধ করে, চিকিৎসা সরঞ্জাম মজুদ করে এবং বিপুল পরিমাণ সরকারি ব্যয়ের ঘোষণা দিয়ে একাধিক দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিধি লঙ্ঘন করেছিল। সে সময় ব্রাসেলসের ছত্রছায়ায় কোনওরকম পারস্পরিক সমন্বয় ছাড়াই সব দেশ ‘একলা চলো রে’ নীতি অনুসরণ করে।
ভবিষ্যতে আবার এমন সংকট দেখা দিলে সেই ‘ত্রুটি’ এড়াতে চান অঞ্চলটির অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী দেশগুলোর নেতারা। তাই বর্তমান দুর্বলতা ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের জন্য জোরালো প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন। বিশেষ করে সংকটকালীন মুহূর্তে ইউরোপে জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।
করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পরেও ইইউ দেশগুলোর মধ্যে সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা গেছে। ইইউ-র আওতায় এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের মধ্যে অসঙ্গতি দূর করার ওপর জোর দিয়েছেন ছয়টি সদস্য দেশের নেতারা।
ইউরোপীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ দফতরের হাতে আরও ক্ষমতা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ অন্য নেতারা। ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে চীন ও ভারতের মতো দেশের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য বাজার থেকেও এসব সংগ্রহের ওপর জোর দিয়েছেন তারা। আগামী ১৯ জুন এক ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে ইইউ নেতারা করোনা সংকটের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করবেন।
এদিকে করোনা সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় তরঙ্গ’ নিয়ে জল্পনাকল্পনার মাঝেই ইউরোপের অনেক দেশে বিধিনিয়ম ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে। পর্যটনের জন্যও কিছু দেশের দরজা সীমিতভাবে খুলে দেওয়া হচ্ছে। সূত্র: ডিডব্লিউ।