একই দাবি জানিয়েছে আরো পাঁচটি সংগঠন। এগুলো হলো বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি, দ্য বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পেপার ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতি এবং চট্রগাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ।
চিঠিতে বিএলসিএমএ জানায়, দেশের স্থানীয় কার্টন উৎপাদন শিল্পের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং শ্রমঘন প্রতিষ্ঠান। এই শিল্পে প্রায় ২০ লাখ মানুষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে বরাবরই সরকার কর্তৃক প্রণীত আইনগুলো এ খাতের জন্য বৈরী অবস্থা সৃষ্টি করে আসছে। অবশ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতি সরকারের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। তাই এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচানোর জন্য আসন্ন বাজেটে চারটি মৌলিক দাবি বিবেচনায় নেবে বলে আশা করছে বিএলসিএমএ।
চিঠিতে উল্লেখ করা চার দফা দাবির মধ্যে প্রথমে বলা হয়েছে, দেশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত প্যাকেজিং কাঁচামাল আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন না হওয়ায় আমাদের পেপার অ্যান্ড পেপার বোর্ড, লাইনার ও মিডিয়াম পেপার আমদানি করতে হয় এবং (সিডি) আমদানি শুল্ক পরিশোধ করতে হয়, যা আমাদের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করছে। পক্ষান্তরে আমাদের বন্ডেড সুবিধা না থাকলেও প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আন্তর্জাতিক মানের কাগজ ব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত রফতানি পণ্যের কার্টন/মোড়ক উৎপাদন করতে হয়। তাই প্যাকেজিং কাঁচামালের ওপরে আমদানি শুল্ক প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের ন্যায় ৫ শতাংশ করার জন্য অনুরোধ জানায় সংগঠনটি।
দ্বিতীয় দাবিতে বলা হয়েছে, যেহেতু আমরা ১৫ শতাংশ বা আদর্শ হারে ভ্যাট প্রদান করি, তাই আমাদের উৎপাদনে ব্যবহূত কাঁচামালের ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কাঁচামাল ক্রয়ে আমরা নিট মূল্যের ওপর ভ্যাট প্রদান করি। কাগজ শিল্পের কাঁচামাল আমদানীকৃত ও বাজার থেকে সংগৃহীত ওয়েস্ট পেপারের ওপর ভ্যাট আরোপ করে রেয়াতি সুবিধা দিয়ে ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে প্যাকেজিং পেপারে ভ্যাট ১৫ শতাংশ করার অনুরোধ জানায় সংগঠনটি।
তৃতীয় দাবিতে বিএলসিএমএ বলছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ৫২ সংশোধন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রহিত করা হয়, যার ফলে আমাদের প্রতিষ্ঠানে সমুদয় নিট আয় থেকে অনেক বেশি পরিমাণ টাকা উেস আয়কর হিসেবে কর্তিত হয়ে যায়। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমাদের নিট আয় ৪-৫ শতাংশের বেশি নয়। এক্ষেত্রে ২-৫ শতাংশ উেস কর্তন আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
বিএলসিএমএর সব শেষ দাবিতে বলা হয়েছে, কমবেশি ৭০টি কাগজকল লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের প্যাকেজিং পেপার উৎপাদন ও সরবরাহ করলেও তাদের প্রায় ৮০ শতাংশ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে কাগজ বিক্রি করে আসছে। এজন্য রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের ন্যায্য রেয়াত সুবিধা পুনর্বহালের লক্ষ্যে প্যাকেজিং পেপারের ওপর ভ্যাট ফাঁকি বন্ধের জোর সুপারিশ জানায় সংগঠনটি।