বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, রোববার একদিনে শনাক্তে শীর্ষে ছিল ব্রাজিল; ৫৪ হাজার ৭৭১। যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ৩৬ হাজার ৬১৭ এবং ভারতে ১৫ হাজার ৪০০। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে। ভাইরাসটির বিস্তার বৃদ্ধির বেশির পাশাপাশি পরীক্ষার হার বাড়ানোও এর কারণ।
করোনার সার্বক্ষণিক তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর সবশেষ তথ্য অনুসারে, মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হিসেবে বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৯০ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে শনাক্ত করা গেছে। মৃতের সংখ্যা ৪ লাখ ৭০ হাজারের কাছাকাছি।
আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত ২৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে ১ লাখ ২২ হাজার এর বেশি মারা গেছে। এছাড়া শীর্ষ আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে লাতিন আমেরিকার ব্রাজিলে আক্রান্ত ১০ লাখ এবং মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
করোনার বিস্তার বাড়ছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, ‘করোনার নতুন ও বিপজ্জনক ধাপে” আমরা। গত বৃহস্পতিবার এক দিনে সর্বোচ্চ করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দেড় লাখের বেশি শনাক্ত হয়েছে, যা এযাবৎকালে সর্বোচ্চ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাইরাসটি এখনো দ্রত তার বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে, এটা এখনো প্রাণঘাতী এবং বেশিরভাগ মানুষ এখনো সংক্রমণ সংবেদনশীল অর্থাৎ অনেকের দেহেই ভাইরাসটির সংক্রমণের শঙ্কা রয়ে গেছে। আমেরিকা ছাড়াও সর্বোচ্চ সংক্রমণের তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য।’
বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত রোগী শনাক্তের দিক থেকে বাংলাদেশ ১৭ নম্বরে। দেশে মোট শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৩০৬ জন। এদিকে গতকাল রোববার ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্তের পর মোট আক্রান্ত ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। পাকিস্তানেও সংক্রমণের রেকর্ড হচ্ছে।
রোগী শনাক্তের দুঃখজনক মাইলফলকে হিসেবে কানাডাকে টপকে আক্রান্তের শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৭তম। প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতও শীর্ষ সংক্রমিত দেশের তালিকায় রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ১ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি রোগী নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান ১৩তম।
এদিকে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের রিসার্চের বরাতে জানিয়েছে, করোনায় প্রকৃত মৃত্যু উল্লেখিত সংখ্যার চেয়ে লক্ষাধিক। আনুষ্ঠানিক রেকর্ডের চেয়েও করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে আরও ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা গেছেন বলে বিবিসি রিসার্চের তথ্যে উঠে এসেছে।
ভাইরাসটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে তাদের প্রাদুর্ভাবের বিভিন্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিছু জায়গায় ভবিষ্যতে মৃত্যুর হার বাড়বে। আবার কিছু জায়গায় মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। তবে সেই স্বাভাবিক অবস্থা কতদিন থাকবে তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বেশিরভাগ দেশ করোনা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। ভাইরাসটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে পারা দেশগুলো এখন শঙ্কায় আছে ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ বা করোনাভাইরাস মহামারি পরের পর্যায়ে বিস্তার লাভের বিষয়টি নিয়ে। তবে যেসব দেশে এখন সংক্রমণ বাড়ছেই তা কবে নিয়ন্ত্রণে আসবে তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।