এর আগে গত ৩ জুন প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলার বা তিন হাজার ৫০৯ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, করোনা সঙ্কটের মধ্যেও বৈধ পথে প্রচুর রেমিট্যান্স আসছে। চলতি মাসের ১৮ জুন পর্যন্ত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১২০ কোটি ৮০ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের পুরো জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার। সুতরাং আগের বছরের একই মাসের তুলনায় চলতি জুনে রেমিট্যান্স বাড়বে। এভাবে রেমিট্যান্স বাড়লেও আমদানি দায় পরিশোধের তেমন চাপ নেই। যে কারণে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রচুর ডলার কিনতে হচ্ছে। মঙ্গলবারও কয়েকটি ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ডলার কেনা হয়। এছাড়া বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি থেকে প্রচুর ঋণ আসছে। যে কারণে এভাবে রিজার্ভে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে।
এর আগে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল ২০১৭ সালের ২২ জুন। এরপর থেকে রিজার্ভ ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে উঠানামা করছিল। তবে করোনাভাইরাসের সময়ে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাস পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ১ হাজার ৬৩৬ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই সময় পর্যন্ত এসেছিল এক হাজার ৫০৫ কোটি ডলার। এ হিসেবে মে পর্যন্ত রেমিট্যান্স বেশি আছে ১৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত মার্চ থেকে মে পর্যন্ত টানা তিন মাস রেমিট্যান্স কমার পরও এ হারে প্রবৃদ্ধি আছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর আগে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অবশ্য রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি থাকলেও রপ্তানির পাশাপাশি আমদানি দায় পরিশোধও একেবারে কমেছে। যে কারণে রিজার্ভ বাড়ছে।
চলতি অর্থবছরের মে পর্যন্ত রপ্তানি আয় দেশে এসেছে তিন হাজার ৯৬ কোটি ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা প্রায় ১৮ শতাংশ কম। এর মধ্যে মে মাসে রপ্তানি কমেছে ৬১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর গত এপ্রিলে কমেছিল ৮৩ শতাংশ। গত এপ্রিল পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৬৪৪ কোটি ডলারের পণ্য। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ কম।