এ লক্ষ্যে গতকাল বেক্সিমকো এলপিজির হোল্ডিং কোম্পানি আরআর হোল্ডিংস লিমিটেড ও আইওসি মিডল ইস্ট এফজেডইর মধ্যে সমান মালিকানায় একটি যৌথ মূলধনি কোম্পানি (জেভিসি) প্রতিষ্ঠার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
ভারত সরকারের পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস ও স্টিলবিষয়ক মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতার ইতিহাসে এ চুক্তি একটি বড় মাইলফলক হয়ে থাকবে। ইন্ডিয়ান অয়েলের দুবাইভিত্তিক একটি কোম্পানি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল একটি এলপিজি কোম্পানির সঙ্গে তাদের দুবাইভিত্তিক হোল্ডিং কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশে এলপিজি ব্যবসার জন্য একজোট হচ্ছে।
মন্ত্রী আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এলপিজি প্রবেশ করায় যেভাবে সাফল্য এসেছে, তেমনি নতুন এই জয়েন্ট ভেঞ্চারও বাংলাদেশে সুলভ মূল্যে এলপিজি সরবরাহের মাধ্যমে আর্থসামাজিক পরিবর্তনে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমান এমপি এ বিষয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য বিনিয়োগ সম্ভাবনার প্রমাণ এই নতুন জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি (জেভিসি)। সারা বিশ্ব যখন কভিড-১৯ মহামারীর অর্থনৈতিক দুর্যোগ নিয়ে লড়াই করছে, তখন এ ধরনের বিনিয়োগ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার শক্তিশালী ও টেকসই বন্ধুত্বেরই প্রতিফলন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার ‘ভিশন ২০৪১’ অনুযায়ী দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণের ওপর ব্যাপক গুরুত্বারোপ করেছে সরকার। বেক্সিমকো এলপিজি ও ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের মধ্যকার এই জয়েন্ট ভেঞ্চার আমাদের সেই লক্ষ্য ও অগ্রাধিকারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণী বাড়ছে। তাদের ক্রয়ক্ষমতাও আগের চেয়ে বেশি। এ কারণে কয়েক বছর ধরে এলপিজি খাত ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। আগামী বছরগুলোয়ও এ খাত আরো এগিয়ে যাবে। এ কারণে দুই অভিজ্ঞ ও বড় কোম্পানির মধ্যে এই মাত্রার অংশীদারিত্ব ও বিনিয়োগ পুরো শিল্পেই গেম চেঞ্জার হয়ে ওঠার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইন্ডিয়ান অয়েলের চেয়ারম্যান সঞ্জিব সিং বলেন, ১৯৯৯ সালে লুব্রিক্যান্টস বাজারজাত করার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ইন্ডিয়ান অয়েল। আজ বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী অংশীদারের সঙ্গে একজোট হয়েছি। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে এলপিজি বাজার পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ খাতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১২ থেকে ১৩ শতাংশ হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই যৌথ উদ্যোগের শক্তি হবে ইন্ডিয়ান অয়েলের দক্ষতা ও স্থানীয়ভাবে বেক্সিমকোর অভিজ্ঞতা।
ব্যবসায়িক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই জেভিসির কাজ শুরু হবে বেক্সিমকোর এলপিজি সম্পত্তি অধিগ্রহণের মাধ্যমে এমনটি উল্লেখ করে সঞ্জিব সিং বলেন, আমরা বাংলাদেশে একটি গভীর সমুদ্রবন্দরে বড় একটি এলপিজি টার্মিনাল স্থাপন করতে চাই, যার ফলে বৃহৎ গ্যাস ক্যারিয়ার থেকে এলপিজি গ্রহণ করা সম্ভব হবে। এতে আমদানির খরচ হ্রাস পাবে। আর আমদানি খরচ কমলে বাংলাদেশের মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে এলপিজি পাবেন।