বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ শুরু হয়েছে বেশ আগেই, তা সবারই জানা। ফুটবলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চালুর উদ্যোগ নিলেও তা আর আলোর মুখ দেখেনি। তবে এবার হকিতে শুরু হচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
হকির এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে সাকিবের মোনার্ক মার্ট ছাড়াও কর্পোরেট দলগুলো হচ্ছে- একমি, রূপায়ন গ্রুপ, ওয়ালটন এবং সাইফ পাওয়ারটেক। ষষ্ঠ দলের কয়েক দিন পর জানিয়ে দেবে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। আর স্বাভাবিকভাবেই এই ছয় দলের অন্যতম হচ্ছে সাকিবের মোনার্ক মার্ট প্রতিষ্ঠান। কেননা নামটি যখন সাকিব আল হাসান, তখন সেরা না হয়েও বা উপায় কই।
বিকেএসপিতে ব্যাট-বলের সাথে সাকিবের বন্ধুত্ব থাকলেও খুব কাছ থেকে দেখেছেন হকি খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ (জিমি), মামুনুর রহমানদের (চয়ন)। যেখানে তাঁর রুমমেট ছিলেন একজন হকি খেলোয়াড় (ইমরান হাসান পিন্টু)। ত
আজ চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এসে সাকিব যেন পুরোনো সেই দিনগুলোর কথাই নতুন করে মনে করিয়ে দিলেন। তিনি বলেন, ‘বিকেএসপিতে পড়ার সময় জিমি ভাই, চয়ন ভাইদের খেলা দেখতাম। আমার রুমমেট ছিল একজন হকি খেলোয়াড়। তখন বিকেএসপিতে অনেক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হতো। আমরা সবাই খেলা দেখতে যেতাম। সমর্থন দিতাম বিকেএসপি দলকে। ওরা জিতে এলে আমরা হোস্টেলে অনেক মজা করতাম। এগুলো আসলে মজার স্মৃতি।’
শুধু আবেগের জায়গা থেকেই নয়, বাংলাদেশের হকিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে এই টুর্নামেন্টে যুক্ত হয়েছেন বলে জানালেন তিনি।
সাকিব বলেন, “খেলার সঙ্গে থাকাটাই আমাদের একটা বড় ব্যাপার। আর বাংলাদেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে খেলাধুলায় অনেক কিছু করার সম্ভাবনা আছে। সবাই যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করছে। আমরাও আমাদের জায়গা থেকে চেষ্টা করা শুরু করলাম। আমাদের হকিতে অনেক সম্ভাবনা আছে। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে আমরা ২৭তম স্থানে আছি। ১৬টি দেশ বিশ্বকাপ খেলে। কাজেই বিশ্বকাপে খেলা তো বেশি দূরের ব্যাপার না। আমার বিশ্বাস যদি হকিটা সঠিকভাবে প্রচার-প্রচারণা পায় এবং ভালোভাবে সবাই উদ্যোগ নেয়, তাহলে আমরা বিশ্বকাপে খেলতেই পারি।”
ক্রিকেটের মতো হকিতেও হতে চান সেরাদের সেরা। আর তাইতো টুর্নামেন্টে নিজের দল মোনার্ক মার্টকে চ্যাম্পিয়ন দেখতে চান সাকিব, ‘যেহেতু একটা দল নিয়েছি। আমাদের চিন্তা থাকবে কীভাবে এই দলের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ভালো হয় এবং আমরা যদি সেটার একটা রোলমডেল হতে পারি, অন্যরা সেটা হয়তো অনুসরণ করতে পারবে। তাতে সামগ্রিকভাবে হকিরই একটা উন্নতি হবে।’
খেলোয়াড়দের চাকরি ও আর্থিক নিরাপত্তার বিসয়টিও তুলে ধরেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়দের সবার ক্যারিয়ার ১০-১৫ বছরের বেশি থাকে না। যারা সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়, তাদের চাকরির সুযোগ ও আর্থিক নিরাপত্তা যদি দিতে পারি, তখন খেলোয়াড়েরা খেলায় অনেক বেশি মনোযোগ দিতে পারবে।’
শুধু হকিতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চান না। দেশের অন্য খেলাগুলোকেও এগিয়ে নিতে অবদান রাখতে চান তিনি। নিজের সেই ইচ্ছার কথা জানাতে গিয়ে বলেন ‘আমি আমাদের জায়গা থেকে সেই চেষ্টাটা শুরু করেছি। মোনার্ক গ্রুপ এরই মধ্যে গলফার সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে কাজ করা শুরু করেছে। এখন হকিতে এসেছি। ক্রিকেটের সঙ্গেও আসার চেষ্টা করছি। অ্যাথলেটিকসের দিকে এগোতে পারি। প্রতিটি জায়গাতে আমাদের অবদান রাখার করার ইচ্ছা আছে।’
হকির ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ থেকে আরও নতুন নতুন খেলোয়াড় উঠে আসবে বলে মনে করছেন সাকিব, ‘আমি মনে করি এই টুর্নামেন্ট হলে হকি অন্তত ৩-৪ জন নতুন খেলোয়াড় পাবে। জাতীয় দলে অনেকে খেলছে। যখন এই দল অনেক বড় হয়ে যাবে তখন প্রতিযোগিতাও বেড়ে যাবে। আমার মনে হয়, এটা থেকে শুধু হকিই উপকৃত হবে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা আরও ভালো অবস্থানে চলে যাব।’