গত ৬ জুলাই এর দাম কমে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়ায়। এর পর থেকে ডলারের ওই দরই ধরে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে রফতানি আয় কমলেও রেমিটেন্সপ্রবাহ বেড়েছে, কমেছে আমদানি ব্যয়। এতে সার্বিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের চেয়ে আয়ের পরিমাণ বেড়ে গেছে।
এদিকে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রায় ২৬০ কোটি ডলারের ঋণ পেয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যেমন বেড়েছে, তেমনি বাজারে ডলারের সরবরাহও বেড়েছে। এতে কমেছে ডলারের দাম।
অর্থনীতিবিদরা জানান, বাজারে ডলারের দাম কমায় এর বিপরীতে টাকার মান বেড়েছে। এতে আমদানি পণ্যের দামও কমবে। এর প্রভাবে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ কমবে। বাড়বে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা। সার্বিকভাবে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় স্বস্তির ধারা অব্যাহত থাকবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ভেতরে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ডলার বেচাকেনা করে। এ বিষয়ে ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য প্রয়াত উপদেষ্টা আল্লাহ মালিক কাজেমী একটি নীতিমালা তৈরি করেন। ওই নীতিমালা অনুযায়ীই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার কেনাবেচা করে। প্রতিদিন আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে যে দরে ডলার বিক্রি হয় তার মধ্যে সর্বোচ্চ দরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করে। একই ডলার সর্বনিæ দরে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কেনে।
গত ৬ জুলাইয়ের পর থেকে ডলার বেচাকেনার দর ৮৪ টাকা ৮০ পয়সাই রয়েছে। বাজারে ডলারের তেমন চাহিদা না থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি অর্থবছরের গত নয় দিনে কোনো ডলার বিক্রি করেনি।
তবে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ১৫ কোটি ডলারের কিছু বেশি কিনেছে। গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কিনেছে ৮৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে ৮৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
গত প্রায় এক বছর ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করছে। গত বছরের ৩০ জুন প্রতি ডলারের দাম ছিল ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। এ বছরের ৩০ জুনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪ টাকা ৮৫ পয়সা। গত মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সার মধ্যেই ছিল। এরপর থেকে এর দাম কমতে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, করোনার কারণে এখন আমদানি হচ্ছে কম। করোনার প্রভাব কমলে আমদানি ব্যয় আবার বেড়ে যাবে। তখন হঠাৎ করে রফতানি আয় ও রেমিটেন্স বাড়ানো কঠিন হবে। এ কারণে সামনের দিনগুলোয় বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
বিদায়ী অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে দুটি উৎসের মধ্যে রেমিটেন্স বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ, রফতানি আয় কমেছে প্রায় ১৭ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের বড় উৎস আমদানি ব্যয় কমেছে ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ।