ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের কার্যকারিতার বিষয়টি আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ জানা যাবে। বিশ্বজুড়ে ১ কোটি ২০ লাখের মানুষ যে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে, ভ্যাকসিনটি তা থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে কি না, এ পরীক্ষার ফলের ওপর তা নির্ভর করছে।
ইকনোমিস্ট বলছে, পরীক্ষায় একবার সফলতার প্রমাণ পাওয়া গেলেই নিয়ন্ত্রকেরা জরুরি ব্যবহারের জন্য ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়ে দেবে। আগামী অক্টোবরের মধ্যেই যাঁরা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগী, তাঁরা ভ্যাকসিন পাবেন।
অস্ট্রেলিয়ার নিউজ ডটকম ডটএইউ জানিয়েছে, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি আন্তর্জাতিকভাবে দ্রুত ও বিস্তৃত আকারে সরবরাহের জন্য সাপ্লাই চেইন তৈরি করছে ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, পরিপূর্ণ অনুমোদন পেতে ভ্যাকসিনটির একাধিক পরীক্ষা লাগবে। আগামী বছরের শুরুতেই এর পূর্ণ অনুমোদন পাওয়া যেতে পারে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ভ্যাকসিন তৈরির এ প্রতিযোগিতাকে আমাদের জীবনকালের সবচেয়ে জরুরি অংশীদারী প্রচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেন।
একই ধরনের ভাইরাসের ক্ষেত্রে আগে যে ওষুধ কার্যকর হয়েছিল, তার ওপর ভিত্তি করেই অক্সফোর্ডের গবেষকেরা অধ্যাপক সারাহ গিলবার্টের নেতৃত্বে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করেন। তাঁরা দ্রুত বড় আকারে মানবপরীক্ষা শুরু করেছেন। যুক্তরাজ্যের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কেট বিনহ্যাম বলেছেন, ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে অক্সফোর্ড। অন্য ভ্যাকসিন তাদের কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়ে যেতে পারে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছেন, ইতিমধ্যে ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন তৈরির ফরমাশ পেয়েছেন তাঁরা। প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম এক কাপ কফির দামের সমান হতে পারে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী প্যাসকল সারিওট বলেন, তাঁদের ভ্যাকসিন এক বছর পর্যন্ত কোভিড-১৯–এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে এর ফল জানা যাবে। ভ্যাকসিনের ফলের জন্য অপেক্ষার পাশাপাশি ভ্যাকসিন উৎপাদন চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অক্টোবরেই ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু করা যাবে।
গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা শুরু হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় গত জুন মাসে পরীক্ষা বাড়ায় অক্সফোর্ড।