বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বিষয়ে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এর মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। অল্প সময়ে অল্প জমিতে অধিক ফসল ফলাতে হবে। একই সঙ্গে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের অপচয় রোধ করতে হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই সরকার কৃষির যান্ত্রিকীকরণে সম্প্রতি ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
সভা সঞ্চালনা করেন কৃষি সচিব নাসিরুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) হাসানুজ্জামান কল্লোল, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইকবাল আখতার মিয়া, পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কৃষি প্রকৌশলীরা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হলে কৃষি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে। এদেশের কৃষি উন্নত দেশের কৃষির মতো আধুনিক যন্ত্রনির্ভর হবে। কৃষিতে বহুমুখী ফসল উৎপাদন হবে।
‘কৃষিপণ্য রফতানির মাধ্যমে কৃষক ও দেশ লাভবান হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারে। তারা এদেশের উপযোগী কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে ও বিদেশ থেকে আনা যন্ত্রপাতিকেও এদেশের উপযোগী করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, তাতে কৃষকেরা যেমন কম দামে কৃষি যন্ত্রপাতি পাবে, তেমনি অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ও বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
ড. রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কৃষিবান্ধব এ সরকার সবসময় কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু যেমন এদেশের কৃষককে উন্নত জীবন দিতে সচেষ্ট ছিলেন, তেমনি তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
‘সরকারের এখন মূল লক্ষ্য হলো টেকসই কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষিকে অধিক লাভজনক, আধুনিকীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ করা। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও কৃষির বহুমুখীকরণের মাধ্যমেই তা করা সম্ভব। সে লক্ষ্যে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রায় ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৫২ হাজার কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে।
এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, সিডার, পাওয়ার থ্রেসার, মেইজ শেলার, ড্রায়ার, পাওয়ার স্পেয়ার, পটেটো ডিগার প্রভৃতি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এসব যন্ত্রপাতি কীভাবে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা বা সংযোজন করা যায়; তা নিয়ে এ সভায় বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সঙ্গে আলোচনা হয়। ভবিষ্যতে আরও আলোচনার মাধ্যমে এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।