এসব প্রতিষ্ঠানের কোনোটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘটতি রয়েছে। অর্থাৎ গ্রাহকের অগোচরে টাকা তুলে নিয়েছে। আবার কোনটি মার্জিন ঋণের আইন লঙ্ঘন করার পাশাপাশি স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমােদিত প্রতিনিধি বিধিমালা লঙ্ঘন করেছে।
অনিয়মে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় এই সাত প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এই সাত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- এসিই ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস লিমিটেড, রিলায়েন্স ব্রোকারেজ সার্ভিসেস লিমিটেড, এসআর ক্যাপিটাল লিমিটেড, প্রাইম লিজিং সিকিউরিটিজ ব্রোকারিং লিমিটেড, লতিফ সিকিউরিটিজ লিমিটেড, এসআইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং কাইয়ুম সিকিউরিটিজ লিমিটেড।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় অনিয়মের কারণে এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমিশন সভা শেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এসিই ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
ডিএসইর পরিদর্শনে উঠে এসেছে, এসিএ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড কোম্পানির অনুমােদিত প্রতিনিধিদের নামে বিনিয়ােগকারী ও বিও হিসাব পরিচালিত করেছে। এর মাধ্যমে ডিএসইর ট্রেডিং রাইট এন্টাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট বিধিমালা- ২০১৩ এর ১৪(৩)(iv) এবং সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমােদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা- ২০০০ এর বিধি ৪(২)(৪) অনুযায়ী অনুমােদিত চুক্তিপত্রের ক্লজ্জ-৫ ভঙ্গ করেছে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপককে মার্জিন সুবিধা দিয়ে কমিশনের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে। সেই সঙ্গে গ্রাহকদেরকে মার্জিন চুক্তিপত্র না থাকা সত্ত্বেও নগন হিসাবে ঋণ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে মার্জিন রুল ১৯৯৯-এর ৩(১) ও ৩(২) ভঙ্গ করেছে। এসিই ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এসব আইন ভঙ্গের বিষয়ে সংশােধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
রিলায়েন্স ব্রোকারেজ সার্ভিসেস লিমিটেড
ডিএসইর পরিদর্শনে উঠে এসেছে এই ব্রোকারেজ হাউসটি তাদের কিছু প্রাহকের হিসাবে ৩ মাসের নেট ক্যাপিটাল ব্যালেন্সের গড়ের ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত ঋণ দিয়ে মার্জিন রুল ১৯৯৯ এর ৫(১) ভঙ্গ করেছে। এছাড়া কোম্পানি ৫ লাখ টাকার বেশি নগদে গ্রহণ করে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে।
এসআর ক্যাপিটাল লিমিটেড
বিএসইসির এসআরআই বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির ২০১৭ সালের ৩০ জুনের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি রয়েছে। এর মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুল ১৯৮৭ এর ধারা ৮এ(১) ও (২) এবং সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমােদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০ এর বিধি-১১ ভঙ্গ হয়েছে। কোম্পানিটি পরবর্তীতে তাদের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি সময় করেছে।
প্রাইম লিজিং সিকিউরিটিজ ব্রোকারিং লিমিটেড
বিএসইসির এসআরআই বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীতে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটিও পরবর্তীতে তাদের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি সমন্বয় করেছে।
লতিফ সিকিউরিটিজ লিমিটেড
বিএসইসির এসআরআই বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির ২০১৭ সালের ৩০ জুনের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীতে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি তাদের পরিচালককে ঋণ সুবিধা দিয়ে বিএসইসির নির্দেশা লঙ্ঘন করেছে। তবে পরবর্তী সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের ঘাটতি এবং পরিচালকের মার্জিন ঋণ সমন্বয় করেছে।
এসআইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড
এই ব্রোকারেজ হাউসটি নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বিও হিসাবে ঋণ প্রদান, ক্যাশ অ্যাকাউন্টে মার্জিন ঋণ প্রদান, জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে ঋন প্রদান, অধিক নগদ টাকা গ্রহন ও একক গ্রাহককে ৩ মাসের নিট ক্যাপিটাল ব্যালেন্সের গড়ের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ দিয়েছে। এ অপরাধের জন্য প্রতিষ্ঠানটি কমিশনের কাছে ক্ষমা চেয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে মর্মে অঙ্গীকার করেছে।
কাইয়ুম সিকিউরিটিজ
প্রতিষ্ঠানটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি, ক্যাশ অ্যাকাউন্টে মার্জিন ঋণ প্রদান, নিজ পরিচালকদের বিও হিসাবে ঋণ প্রদান, নিজ প্রতিষ্ঠানের অনুমােদিত প্রতিনিধির নামে বিও হিসাব খােলা এবং ৫ লাখ টাকার বেশি নগদ গ্রহণের অপরাধ করেছে। তবে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি সময়সহ অন্যান্য অনিয়ম ইতােমধ্যে পরিপালনে সক্ষম হয়েছে।