জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মহামারীর প্রেক্ষাপটে চলতি ও আগামী বছর একাধিক দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা রয়েছে। এ দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের এখনই বিনিয়োগ করতে হবে। এরই মধ্যে সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেন ও নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ক্রমেই একই পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুদান, জিম্বাবুয়ে ও হাইতি। ফলে মহামারীর কারণে বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় অতিরিক্ত এ তহবিল চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়সহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যয় করা হবে। একই সঙ্গে আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার মধ্যে হিউম্যানিটারিয়ান এয়ার ব্রিজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হবে। লোকক বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন পর্যন্ত ধনী দেশগুলোর সহায়তাবিষয়ক পদক্ষেপ মোটদাগে পর্যাপ্ত নয়।
মার্চের পর থেকে জাতিসংঘ এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো অনুদানের জন্য আবেদন জানাল। প্রাথমিকভাবে সংস্থাটি ২০০ কোটি ডলারের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু নতুন এ আবেদন মোট অর্থের চাহিদার পরিমাণ নিয়ে গেল ১ হাজার ৩০ কোটি ডলারে। অথচ মার্চের পর থেকে এখন পর্যন্ত সংস্থাটি মানবিক কার্যক্রম পরিকল্পনা পরিচালনায় অনুদান পেয়েছে মাত্র ১৭০ কোটি ডলার।
লোকক জানিয়েছেন, এ অবস্থায় অনুদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি আশা করছেন, গত দুই-তিন বছরে এসব দেশে যে ভূমিকা রেখেছিল, তারা পুনরায় সেই ভূমিকা পালন করবে। এদিকে চীন সম্প্রতি দরিদ্র দেশগুলোয় ২০০ কোটি ডলার খরচ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে। লোককের মতে, এ অর্থের কিছু অংশ সরাসরি জাতিসংঘের সহায়তা পরিকল্পনায় খরচ করা গেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
জাতিসংঘ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলমান মানবিক সংকট নিয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়া হলে ডিসেম্বর নাগাদ বিশ্বের ১২ কোটি ১০ লাখ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হলে লেবানন, সেনেগাল, বেলিজ, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে ও বুরুন্ডির মতো দেশে অস্থিরতা ও সংঘাত দেখা দেবে। অন্যদিকে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোয় প্রচুর মানুষ মারা যাবে। জাতিসংঘের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বিশ্বের নিম্ন আয়ের ৩০টি দেশে এ ভাইরাসের কারণে মারা যেতে পারে ১৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ।