দরিদ্র দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা বাড়ছে জি২০ দেশগুলোর ওপর

দরিদ্র দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা বাড়ছে জি২০ দেশগুলোর ওপর
নভেল করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দরিদ্র দেশগুলোর দুর্ভোগ এখনো কমেনি। বরং কিছু অঞ্চলে মহামারীর প্রকোপ আরো বাড়তে থাকায় চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে উদীয়মান দেশগুলো। এ অবস্থায় আরো বেশি সহায়তা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা বাড়ছে গ্রুপ অব টুয়েন্টি বা জি২০ দেশগুলোর ওপর। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিগুলোর ফোরাম এ বিষয়ে চিন্তাভাবনাও করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

করোনার অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় দরিদ্র দেশগুলোকে কীভাবে সহায়তা করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনার জন্য গত মার্চের শেষের দিকে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন জি২০ নেতারা। ওই বৈঠকে ঘোষণা আসে, অন্তত চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত উদীয়মান দেশগুলোকে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড় দেয়া হবে।

ওই বৈঠকের তিন মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে খুব বেশি উন্নতি হয়নি। এ অবস্থায় বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গতি কীভাবে আরো বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনার জন্য গতকাল আরেকটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসার কথা ছিল জি২০ দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি ও অর্থমন্ত্রীদের। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈঠকের ফলাফল জানা যায়নি। তবে খাদের কিনারে থাকা উদীয়মান অর্থনীতিগুলোকে টেনে তুলতে ঋণ অবকাশের পাশাপাশি আরো কিছু সহায়তা প্রদানের বিষয়ে তারা আলোচনা করতে পারেন বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।

গত বৈঠকের সময় করোনার প্রকোপ এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোয় বেশি ছিল। আর এখন মহামারীর প্রবাহ বেশি বয়ে যাচ্ছে লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর দিয়ে। তাদের মধ্যে কয়েকটি দেশে সংক্রমণের হার বাড়ছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে।

ধনী দেশগুলোর নজিরবিহীন সহায়তায় প্রথম সারির উদীয়মান দেশগুলো বেশ উপকৃত হয়েছে। ঋণ অবকাশ তাদের পুনরায় আন্তর্জাতিক মূলধনি বাজারে প্রবেশে সহায়তা করেছে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত ছোট অর্থনীতিগুলো তাতে খুব বেশি উপকৃত হয়নি। এ কারণে এসব দেশের ঋণ অবকাশ ছাড়াও আরো সহায়তা প্রয়োজন।

জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক আনা জেলপার্ন বলেছেন, ‘ঋণসহায়তার বিষয়টি মাথায় রাখা ভালো। কিন্তু আমাদের কেবল এটি কেন্দ্র করে পরিকল্পনা সাজালে চলবে না। অন্য বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে। মহামারীর কারণে জনস্বাস্থ্যে যে আঘাত নেমে এসেছে, তা সামাল দিতে যা কিছু প্রয়োজন, সেগুলোর অর্থায়নে দরিদ্র দেশগুলোকে সহায়তার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে।’

জি২০-এর ঋণ অবকাশ সুবিধার আওতায় রয়েছে ৭৩টি দেশ। করোনার কারণে সবচেয়ে সংবেদনশীল অবস্থায় রয়েছে, এমন অর্থনীতিগুলোকে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের ঋণ পরিশোধ থেকে আপাতত ছাড় দেয়া হয়েছে।

অক্সফামের মতো দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, দরিদ্র দেশগুলো এখন পর্যন্ত যে সহায়তা পেয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ছোট অর্থনীতিগুলোর জন্য ঋণ অবকাশের তদবিরে কাজ করে জুবিলি ইউএসএ নেটওয়ার্ক। অলাভজনক সংস্থাটির এরিক লেকম্পট গতকালের বৈঠকের আগে জানান, এবারের আলোচনায় দরিদ্র দেশগুলোর জন্য ঋণ অবকাশের সুবিধা চলতি বছরের পরও অব্যাহত রাখার বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পারে। এছাড়া মধ্যম আয়ের দেশগুলোকেও এ সহায়তার আওতায় আনার বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন জি২০ নেতারা।

বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ কারমেন রেইনহার্ট বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, জি২০ দেশগুলোর ঋণ পরিশোধে ছাড়ের সুবিধা চলতি বছরের পরও অব্যাহত রাখার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’ অবশ্য গতকালের বৈঠক শেষেই এ বিষয়ে কোনো চুক্তির ঘোষণা আসবে কিনা, সে ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস দেননি তিনি।সুত্র: ব্লুমবার্গ।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির শঙ্কা
ফিলিস্তিনি বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে চায় ইসরায়েল
গাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে থাকবেন ট্রাম্প, যুদ্ধবিরতিতে ২০ প্রস্তাব
যুক্তরাষ্ট্রে এবার ওষুধ রপ্তানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক বসালেন ট্রাম্প
থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নিহত ৩৯
পাকিস্তানে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাত
উত্তর কোরিয়া ও মিয়ানমারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বড় নিষেধাজ্ঞা
ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর দখল করতে দেব না: ট্রাম্প
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ভেনেজুয়েলা
৭৬% মার্কিনি মনে করেন, ট্রাম্প নোবেল পাওয়ার যোগ্য না