গত শুক্রবার জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, চীন ছাড়তে প্রণোদনা পাওয়ার তালিকায় রয়েছে ৫৭ কোম্পানি। এর মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন মাস্ক প্রস্তুতকারক কোম্পানি আইরিস ওহায়ামা ইনকরপোরেশন এবং শার্প করপোরেশনও রয়েছে। এসব কোম্পানিকে মোট ৫৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইয়েন বা ৫৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমান ভর্তুকি দেয়া হবে।
এর বাইরে আরো ৩০টি কোম্পানি তাদের কারখানা ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশে স্থানান্তরের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা পাবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। তবে এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর জন্য সরকারের মোট বাজেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
জাপানের পত্রিকা নিক্কেই জানিয়েছে, এই কর্মসূচিতে জাপান সরকার মোট ৭০ বিলিয়ন ইয়েন বাজেট করেছে।
এই টাকাটা মূলত গত এপ্রিলের একই ধরনের কর্মসূচির জন্য সরকার যে ২৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইয়েন প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল সেটিরই অংশ। চীনা সাপ্লাই চেইনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে দেশে ফেরত আনা বা অন্য কোনোদেশে স্থানান্তর করার প্রক্রিয়ায় এই অর্থ খরচ করা হবে।
গত বছর থেকে যখন সিনো-মার্কিন বাণিজ্য বিরোধ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে শুরু করে তখন থেকেই অনেক দেশ চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর কথা ভাবছে। আধুনিক মুক্তবাজার অর্থনীতিতে অনেক দেশের অর্থনীতি ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাত ব্যাপকভাবে চীন-নির্ভর হয়ে পড়েছে। দেশগুলো এখন এই নির্ভরশীলতার শৃঙ্খল ছিন্ন করতে চাচ্ছে।
জাপানের আগেই ২০১৯ সালে তাইওয়ান প্রথম দেশীয় কোম্পানিগুলো দেশে ফেরানো বা স্থানান্তর করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। তারা চীনের বিনিয়োগ দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ শুরু করে। তবে এছাড়া অন্য কোনো দেশের এখনো তেমন উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি।
চীন জাপানের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার, সেখানে জাপানি কোম্পানিগুলোর বিপুল অংকের বিনিয়োগ রয়েছে। কিন্তু কভিড-১৯ মহামারী এই অর্থনৈতিক সম্পর্ককে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, সেই সঙ্গে জাপানে চীনের ভাবমূর্তিও এখন তলানিতে।
প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১২ সালে জাপান বিরোধী দাঙ্গার পর থেকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মহামারী সেই উদ্যোগ ভেস্তে দিল। সেই সঙ্গে পূর্ব চীন সাগরে দ্বীপ ও গ্যাসের খনির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বও এখন চরমে।