কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেশের বাইরে থাকায় এতে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম জুম প্লাটফর্মে এসব কথা বলেন।
গতকালের সভায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘কক্সবাজার জেলাধীন ক্ষতিগ্রস্ত পোল্ডারগুলোর পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাঁধ পুনর্নির্মাণ ও প্রতিরক্ষামূলক কাজের ভ্যারিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। আগে এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৫৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা বেড়ে এ কাজে ব্যয় দাঁড়াল ১৫৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এছাড়া সভায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের দুটি প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ক্রয় কমিটি। ২৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব পণ্য সরবরাহের কাজ পেয়েছে বিআরবি কেবলস লিমিটেড। ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ’ শীর্ষক প্রকল্পের একটি প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে ক্রয় কমিটি। ১৫৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্যাকেজটি বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করবে একতা পাওয়ার লিমিটেড, ভিকার ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড ও পাসা ট্রান্সফরমার লিমিটেড।
জানা গেছে, সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় ‘প্রকিউরমেন্ট অব ইকুইপমেন্ট ফর ইমপ্লিমেন্টেশন অব প্রি-ভোকেশনাল অ্যান্ড ভোকেশনাল প্রোগ্রামসংক্রান্ত ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ৯৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জয়েন্ট ভেঞ্চারে এসব পণ্য সরবরাহের কাজ পেয়েছে ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেড। এছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে মেয়াদি চুক্তির আওতায় পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্ব্বর পর্যন্ত সময়ে ২ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা তেল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
৭ লাখ ৩০ হাজার টন সার আমদানি: চলতি অর্থবছরে ৫ লাখ ৫০ হাজার টন ইউরিয়া সার ও ১ লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করা হবে। সব মিলিয়ে ৭ লাখ ৩০ হাজার টন সার আমদানির ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। আর এসব সার আমদানিতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছর কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের চুক্তিবদ্ধ ৫ লাখ ৫০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদনের ক্ষমতা শিল্পমন্ত্রীকে প্রদানের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রথম লটের ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব আজকের কমিটির সভায় দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতি মাসে অন্তত দুটি করে আরো ১৭টি লটে বাকি সার আমদানি করা হবে।
মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, মোট সাড়ে পাঁচ লাখ টন ইউরিয়া সার নিরবচ্ছিন্নভাবে আমদানির লক্ষ্যে লটভিত্তিক মূল্য ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে গেলেও সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আলাদা অনুমোদনের পরিবর্তে বিশেষ বিবেচনায় এ বছরের অন্য সব লটের অনুমোদনের ক্ষমতা শিল্পমন্ত্রীকে প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সাড়ে পাঁচ লাখ টন সার আমদানিতে সরকারের মোট ব্যয় হবে আনুমানিক ১ হাজার ১২ কোটি টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় এমওপি সার আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে। এ প্রস্তাবের আওতায় ৩৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার টন সার সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠানটি।