দৈনিক রেকর্ড দুই লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক ও এর মিত্ররা। সম্প্রতি ওপেক প্লাস এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত জানায়। এর প্রভাবে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ওপেক ও এর মিত্রদের এই সিদ্ধান্ত পশ্চিমা বিশ্বে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক ক্ষোভের পাশাপাশি উদ্বেগ তৈরি করেছে। যদিও রাশিয়া এই জোটের অন্যতম প্রধান সদস্য, কিন্তু বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদক হিসেবে ওপেক প্লাসের যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রধান নিয়ন্ত্রক সৌদি আরব। এ কারণে উৎপাদন কমানোর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বাইডেন প্রশাসনের ক্রোধের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় রিয়াদ।
ব্যাপক মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় আশঙ্কার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বিবাদের জেরে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবররাহ প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। এমন অবস্থায় দুশ্চিন্তার শেষ নেই ইউরোপীয়দের।
যদিও ওপেক বলেছে, তাদের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে আগামী নভেম্বর থেকে। কিন্তু বুধবার (৫ অক্টোবর) সিদ্ধান্ত জানানোর পার থেকেই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
এমন পরিস্থিতি আটকাতে পশ্চিমা দেশগুলো কয়েক মাস যাবৎ প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। নির্বাচনী প্রচারণার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে সৌদি সরকারকে বিশ্বে অচ্ছুৎ বানিয়ে ফেলার অঙ্গীকার করেছিলেন, সেই তিনি গত ১৫ জুলাই জেদ্দায় গিয়ে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং তেলের উৎপাদন বাড়াতে অনুরোধ জানান।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, ইউরোপীয়রাও চেষ্টা চালিয়ে গেছে যেন সৌদি আরব বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়ায়। গত জুলাইয়ের শেষে সৌদি যুবরাজকে প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে রাজকীয় সংবর্ধনা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। একই অনুরোধ নিয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর রিয়াদে গিয়েছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’র জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়েছিলো। গত সাত বছরের মধ্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এটাই ছিল সর্বোচ্চ।