সোমবার (২৭ জুলাই) ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
আদালতে ইউআইটিএস’র পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন যুবাইরুল ইসলাম ও আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এবং আসামি শওকতের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ঢাকা বারের সভাপতি ইকবাল হোসেন।
এর আগে ইউআইটিএসের উপাচার্যকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় করা মামলার তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায় পুলিশ।
মামলার প্রসঙ্গে জানা যায়, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের (ইউআইটিএস) উপাচার্যকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ৬০ কোটি চাঁদা দাবি করেন বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গলীগের প্রেসিডেন্ট শওকত হাসান মিয়া। এ ঘটনায় গত ২ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা থানায় শওকতকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী মো. মোস্তফা কামাল।
তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে গত ১৫ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। তবে ওইদিনে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেস চৌধুরীর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এরপর চাঁদাবাজির এ মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন শওকত হাসান। তার জামিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৮ মার্চ। এর মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত। বরং আগাম জামিন নিয়েই আত্মগোপনে যান শওকত হাসান।
এদিকে শওকত হাসান মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ‘ইউআইটিএস’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এতে উল্লেখ করা হয়, শওকত হাসানের মালিকানাধীন গুলশানের বারিধারা এলাকায় অবস্থিত ‘জামালপুর টুইন টাওয়ার-২’ ভাড়া নিয়ে ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে ইউআইটিএস। এরই মধ্যে ভাটারা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ শেষ হলে ২০১৯ সালের মে মাস থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর শুরু হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত শওকত হাসান ও তার ক্যাডাররা উপাচার্যের কাছে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ৬০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা ছাড়াও মালামাল স্থানান্তরে বাধা দেন। এ বিষয়ে ২০ নভেম্বর ২০১৯ ভাটারা থানায় একটি জিডি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ গত ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ সন্ধ্যায় ৫-৬ জন সশস্ত্র ক্যাডার নিয়ে এসে ইউআইটিএসের উপাচার্যের গাড়ি আটকে ৬০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন শওকত হাসান। চাঁদা না পেয়ে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি ও প্রাণনাশের ভয়ভীতিও দেখান তিনি।