ইস্টার্ন ব্যাংক চেয়ারম্যানের পরিবারের ১৪৬ হিসাব খতিয়ে দেখবে দুদক

ইস্টার্ন ব্যাংক চেয়ারম্যানের পরিবারের ১৪৬ হিসাব খতিয়ে দেখবে দুদক

ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী চৌধুরীর পরিবারের ১৪৬ ব্যাংক হিসাবে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি সন্দেহভাজন লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


যদিও এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানা গেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দ অবস্থায় রয়েছে।


রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কামরুল ইসলাম নামেন একজন আইনজীবী এ বিষয়ে একটি অভিযোগও দাখিল করেছেন।


অভিযোগ অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, অভিযোগটি ইতোমধ্যে আমরা পেয়েছি। বর্তমানের আমাদের যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে রয়েছে। ওই কমিটির সুপারিশের আলোকের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


দাখিল করা অভিযোগ ও বিএফআইইউ’র গোয়েন্দা প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান তাসমিয়া আম্বারীন, মেয়ে জারা নামরীন ও ছেলে জারান আলী চৌধুরী চারজনের এখন পর্যন্ত ২৮টি ব্যাংকে ১৮৭টি হিসাব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ইবিএল চেয়ারম্যানের নামে ১৪টি হিসাব, তার স্ত্রীর নামে ১৫টি হিসাব, জারা নামরীনের নামে ৯টি হিসাব ও মো. জারান আলী চৌধুরীর নামে ৩টি হিসাব এবং তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ১৪৬টি হিসাব পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ১৫ জুন পর্যন্ত আসা হিসাব অনুযায়ী এসব ব্যাংক হিসাবে ৮ হাজার ৪০৭ কোটি ৯১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৮২.২২ টাকা জমা করা হয়। যার মধ্যে ৮ হাজার ২৪৭ কোটি ৫৬ লাখ ৯২ হাজার ৭৬০.৩১ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ওই সময়ে ব্যাংকগুলোতে স্থিতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৩ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার ১৫৮ টাকা। উল্লিখিত হিসাবগুলোর কেওয়াইসি, হিসাব বিবরণী এবং অন্যান্য দলিল বিশ্লেষণ করা হয়েছে।


হিসাবগুলোর মধ্যে শওকত আলী চৌধুরীর ঢাকা ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখায় পরিচালিত ঢাকা ব্যাংক প্লাটিনাম হিসাবটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি হিসাবটি ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি খোলেন এবং ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর বন্ধ করেন। এই ব্যাংক হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ৯৬ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ টাকা। মোট উত্তোলনের পরিমাণ মোট ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি ২৩ লাখ ২ হাজার ৮৩৫ টাকা। তবে বন্ধকালীন স্থিতি ছিল ১৭ লাখ ৩০ হাজার ৪৩৯ টাকা। এ হিসাব ব্যবহার করে তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এসএন কর্পোরেশনের লেনদেন করেছেন, যা পরোক্ষভাবে ট্যাক্স ফাঁকির উদ্দেশে করা হয়ে থাকতে পারে বলে বিএফআইইউ মনে করছে।


শুধু তাই নয়, অভিযোগ রয়েছে শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যের নামে সিঙ্গাপুর, দুবাই ও যুক্তরাজ্যে সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরে দুটি বাড়ি ও অন্য দুই দেশের সম্পদের তথ্যগুলো বিএফআইইউ তদন্ত করছে বলে জনা গেছে।


গত ৩০ শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বিএফআইইউ। এখন পর্যন্ত সেগুলো জব্দ অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে। বিএফআইইউর একটি সূত্রানুসারে, শওকত আলী চৌধুরীর সঙ্গে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফতের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।


আরও অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের ১৭ বছরের শাসনামলে শওকত আলী চৌধুরী চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ জে এম নাসির ও শেখ হাসিনার সাবেক এপিএস আলাউদ্দিন নাসিম, চৌধুরী নাফিস শারাফাত, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, নূর আলী ও ফজলে করিমের সঙ্গে অংশীদারিত্ব মূলক ব্যবসা ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদীর সম্পর্ক রয়েছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

থাইল্যান্ডে সিকদার পরিবারের ১৩৩ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধের আদেশ
এস আলমসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির নির্দেশ
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান হত্যা মামলায় গ্রেফতার
দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণ পৃথক করলো সরকার
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলায় দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে
হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন মাহমুদুর রহমান
ইস্টার্ন ব্যাংক চেয়ারম্যানের পরিবারের ১৪৬ হিসাব খতিয়ে দেখবে দুদক
বিচারপতি আক্তারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ
হাবিবুরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৪তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ