অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, সব পর্যায়ে পরীক্ষায় অসাধু উপায়ের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমার লজ্জা হয়, যখন শুনি পরীক্ষার হলে শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহ করেন এবং মা-বাবারা পর্যন্ত পরীক্ষার হলে উত্তরপত্র সরবরাহ করেন।
এ ধরনের ঘটনা বাস্তবিকই দুর্ভাগ্য, কলঙ্ক ও হতাশাজনক বলে এ সময় মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি। একই সঙ্গে এ অভিশাপ প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, পরীক্ষায় এ ধরনের অসাধু উপায় অবলম্বনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং আমি কী বলতে চাচ্ছি, শিক্ষার্থীদের তা উপলব্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি আমার জীবনে পরীক্ষায় কয়েকবার ফেল করেছি। কিন্তু কখনো পরীক্ষায় অসাধু উপায় অবলম্বন করিনি। এমনকি পরীক্ষার হলে প্রশ্নের উত্তর কী হবে, এ বিষয়েও কখনো কারো কাছে জানতে চাইনি। এজন্য আমি নিজে গর্ববোধ করি।
এ সময় নিজ পেশার মর্যাদা বিবেচনায় রেখে যেকোনো ধরনের অনৈতিক চর্চা পরিহার করে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সততা, নিষ্ঠা ও পারদর্শিতা প্রমাণ করতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাকে ভাবতে হবে, আপনি যদি কোনো অনিয়মের প্রশ্রয় দেন অথবা কোনো দুর্নীতিতে জড়ান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি কী হবে।
নগরীর পুরান ঢাকার ধূপখোলা খেলার মাঠে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট পদার্থবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, জবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে কয়েকজন সংসদ সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিব এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সনদ দেয়া হয়। এছাড়া আরো ১১ জন এমফিল ও ছয়জন পিএইচডি সনদ লাভ করেন।
১৫০ বছরের পুরনো এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৮৬৩ সালে প্রথমে ব্রাহ্ম স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি পরবর্তী সময়ে জগন্নাথ কলেজ এবং ২০০৫ সালে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়।