সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজিরা ঐতিহাসিক এই ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহর জিকিরসহ অন্যান্য ইবাদতে মশগুল থাকবেন।
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার কারণে এবার স্বল্পসংখ্যক হজযাত্রী নিয়ে সীমিত পরিসরে হজ পালিত হচ্ছে।
আরাফাতের ময়দানে ধ্বনিত হবে ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুল্ক।’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনও শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)।
কাবা শরিফে নতুন গিলাফও পরানো হবে।
প্রতিবছর যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২০-২৫ লাখ মুসলমান এসে হজ পালন করে থাকেন, এবার সেখানে সৌদি আরবে অবস্থানরত মাত্র ১০ হাজার মানুষ এই সুযোগ পাচ্ছেন বলে দেশটির কোনও কোনও পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। আবার কোনও কোনও পত্রিকা বলছে, মাত্র এক হাজার মানুষ এবার হজের সুযোগ পাচ্ছেন। আসলে কতজন মুসল্লি হজে অংশ নিচ্ছেন, তা গণমাধ্যমকে জানায়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ। সৌদি আরবের বাইরে থেকে গিয়ে কাউকে এবার হজের সুযোগ দিচ্ছে না দেশটির সরকার। শুধু সৌদি নাগরিকদের অংশগ্রহণে এবারের হজ তাই ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে।
প্রায় ৯০ বছর পর এমন হজ দেখছে মুসলিম উম্মাহ। নেই চিরচেনা ভিড়, সবার মুখেই মাস্ক, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে সারছেন তাওয়াফ।
এক হাজি বলছেন, ‘সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে আমার কাছে জানতে চায় আমি এবার হজ করতে ইচ্ছুক কী না? আমি সম্মতি জানানোর পর একদল লোক এসে প্রথমে আমার বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এই ইলেকট্রিক ব্রেসলেট পড়িয়ে দিয়ে যায়। এর মাধ্যমে আমার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।'
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এশার নামাজের পরই মক্কা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনায় যান হাজিরা। আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল আড়াই লাখ তাবু। কিন্তু ব্যবহার হচ্ছে গুটিকয়। বুধবার সারাদিন ইবাদত বন্দেগিতে কাটান তারা।
বৃহস্পতিবার ৯ জিলহজ, সূর্যোদয়ের পর মুসল্লিরা যাবেন প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে। এখান থেকে খুতবা সম্প্রচারকালে বাংলাসহ ১০ ভাষায় অনূদিত হবে এবার।
হজ এবং ওমরা বিষয়ক মন্ত্রী আমর আল মাদ্দাহ বলেন, সংক্রমণ এবং প্রাণহানি রোধে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে আমাদের সরকার। প্রযুক্তির মাধ্যমে সব হাজির গতিবিধি নজরদারি করা হচ্ছে।
কাবা শরীফের হাজরে আসোয়াদ চুমু এবং স্পর্শ করাও নিষিদ্ধ। জমজমের পানি সরবরাহ করা হচ্ছে প্লাস্টিক প্যাকেটে। পাথর নিক্ষেপেও থাকছে নতুনত্ব। শয়তানকে মারার জন্য এবার জীবানুমুক্ত পাথর সরবাহ করা হচ্ছে হাজিদের। সর্বোচ্চ ৫০ হাজি একসঙ্গে পাথর নিক্ষেপ করতে পারবেন।