এশিয়ার দেশেগুলোর মধ্যে পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ দুটি স্থানে রয়েছে চীন ও বাংলাদেশ। তুলনামূলকভাবে শ্রম অনেক সস্তা হওয়ায় শীর্ষ স্থান দখল করে আছে এশিয়ার এ দেশ দুটি। তবে এই পরিস্থিতি বদলাতে জোট বেঁধেছে জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই কোম্পানি।
পোশাক শিল্পে রোবটিক্স প্রযুক্তি যোগ করার কাজে ‘এক’ হয়েছে জার্মানির প্রযুক্তি কোম্পানি সিমেন্স এজি এবং মার্কিন ডেনিম কোম্পানি লেভি স্ত্রস। পোশাক সেলাইয়ের জন্য বাংলাদেশ বা চীনের মতো দেশের শ্রমিকদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে উৎপাদন প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বাজারে ফেরাতে চাইছে কোম্পানিগুলো। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
স্যান ফ্রান্সিসকোর সিমেন্স ল্যাবের প্রকল্প প্রধান ইউজেন সোলোজাওয়ে বলেন, ''পোশাক হচ্ছে সেই লাখ কোটি ডলারের শিল্পখাত, যা এখনও অটোমেটেড হয়নি।''
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকেই সিমেন্সের ওই ল্যাবরেটরি পোশাক উৎপাদন প্রক্রিয়ার রোবট ব্যবহারের এই প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছে। মহামারীর কারণে বিদেশি শ্রমের ওপর নির্ভর না করে নিজেদের ভূখণ্ডে রোবট দিয়ে কাপড় সেলাই করার এ ধারণা পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর কাছে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
২০২০ সালে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস যখন বিশ্বব্যাপী আঘাত হানে তখন লকডাউনের কারণে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে ভোক্তা পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা। তাই সেই সময় থেকেই এসব কোম্পানির কাছে দূর দেশে উৎপাদন কারখানার ওপর নির্ভর করার ঝুঁকির বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
রয়টার্স বলেছে, পশ্চিমা কোম্পানিগুলো উৎপাদন প্রক্রিয়া নিজেদের ভূখণ্ডে ফেরানোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে মনোযোগী হলেও বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় প্রকাশ্যে এ নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করছে না।
তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উৎপাদনমুখী শিল্প বন্ধ হয়ে গেলে স্থানীয় শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন – যৌক্তিকভাবেই এমন আশঙ্কা বাড়বে তখন। বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোতে এই শিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে এরই মধ্যে জিনস সেলাই কারখানার কিছু কাজে অটোমেশন ও রোবটিক্স প্রযুক্তি প্রয়োগের কৌশল তৈরি করে অনলাইনে সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন উদ্ভাবক জনাথান জোর্নোউ। তিনি এমনকি মৃত্যু হুমকিও পেয়েছেন।
তবে পোশাক সেলাইয়ে রোবট ব্যবহারের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতাগুলোর একটি হচ্ছে কাপড়ের নমনীয়তা, পুরুত্ব আর বুনন। একজন মানুষ নিজের স্পর্শ দিয়ে যেভাবে কাপড়ের অনুভূতি নিতে পারেন, রোবটের সে ক্ষমতা নেই।