দেশে জ্বালানি তেলের সংকট কাটাতে ১৬ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) আমদানি করা হবে। ২০২৩ পঞ্জিকা বর্ষের জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এ তেল আমদানি করা হবে বলে জানানো হয়। সৌদি আরব ও আবুধাবি থেকে এ তেল আমদানিতে ব্যয় হবে ১৪ হাজার ৩৫৯ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এসংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আজ অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
সূত্র মতে, ইআরএলে মারবান ও অ্যারাবিয়ান লাইট অপরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। বিপিসি আবুধাবী থেকে সাত লাখ মেট্রিক টন মারবান এবং সৌদি আরব থেকে ৯ লাখ মেট্রিক টন অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড (এএলসি) অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের সরবরাহের ঘাটতি, দামের অস্থিতিশীলতা ও তেলবাহী জাহাজের স্বল্পতা রয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে সব ধরনের জ্বালানি পণ্যের দাম ও জাহাজভাড়া দফায় দফায় বাড়ছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে ইস্টার্ন রিফাইনারি বিপিসির কাছে ২০২৩ পঞ্জিকাবর্ষের জন্য চাহিদাপত্র দিয়েছে। চাহিদাপত্র অনুযায়ী, ক্রুড অয়েলের ব্যারেলপ্রতি প্রাক্কলিত এএলসির দাম অনুমানিক ধরা হয়েছে ১১৮.৯২ ডলার এবং মারবানের প্রতি ব্যারেলের অনুমিত দাম ধরা হয়েছে ১০৪.৪৩ ডলার। এ দামের মধ্যে ২০২২ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময় পর্যন্ত আমদানি করা ক্রুড অয়েলের গড় ফ্রি অন বোড (এফওবি) দাম, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মাধ্যমে আমদানীকৃত ক্রুড অয়েল পরিবহনে জাহাজভাড়া, লাইটারেজ খরচ এবং জাহাজভাড়ার ওপর বিএসসির ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ রয়েছে।
সৌদি আরব থেকে ৯ লাখ মেট্রিক টন এএলসি আমদানি করতে ব্যয় হবে আট হাজার ৩৯২ কোটি আট লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর আবুধাবী থেকে সাত লাখ মেট্রিক টন মারবার আমদানিতে ব্যয় হবে পাঁচ হাজার ৯৬৬ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ১৬ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ১৪ হাজার ৩৫৯ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) ঋণ, বিপিসির বাজেট বরাদ্দের বিপরীতে নগদ এবং ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে প্রস্তাবিত মারবান ক্রুড অয়েল ও অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড আমদানির অর্থায়ন করা হবে।
আর্ন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ও জাহাজভাড়া কমবেশি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমানে কমবেশির ফলে নিরূপিত আমদানি দামও কমবেশি হতে পারে। প্রস্তাবিত অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শুল্ক ও ভ্যাট বিপিসির নিজস্ব তহবিল থেকে পরিশোধ করা হবে।
অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড (এএলসি) সরবরাহের বিষয়ে ১৯৯৪ সালে সৌদি আরব ও বিপিসির মধ্যে একটি চুক্তি হয়। এ চুক্তি নবায়ন অংশে উল্লেখ আছে, কোনো পক্ষ চুক্তি শেষ হওয়ার ৬০ দিন আগে চুক্তি বাতিলের জন্য লিখিতভাবে অবহিত না করা হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী এক বছরের জন্য নবায়ন হয়ে যাবে।
অর্থসংবাদ/কেএ