শীতকালে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা বেড়ে যায় হুট করেই। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে উইন্টার ব্লুজ নামক মানসিক বিষণ্ণতাও দেখা দেয় অনেকের। তবে এই আবহাওয়ার বদলে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হন মাইগ্রেনের রোগীরা। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় মাইগ্রেনের ব্যথার প্রকোপ বেড়ে যায় বেশ অনেকটা।
যার প্রধান কারণ হলো, শীতকালে সূর্যের দেখা কম পাওয়া। সূর্যের আলো কম পাওয়া মানেই হলো শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি। যার প্রভাব সরাসরি দেখা দেয় ক্রনিক মাইগ্রেনের রোগীদের মাঝে। আমেরিকান হেডেক সোসাইটির গবেষকেরা জানান, মাইগ্রেন আক্রান্ত রোগীদের মাথাব্যথা জনিত সমস্যা শীতকালে বেড়ে যায় প্রায় ৪২ শতাংশ পর্যন্ত।
কষ্টকর এই সমস্যাটি যেন বাড়তে না পারে এবং পুরো শীত জুড়ে নিজেকে মাইগ্রেনের প্রকোপ থেকে দূরে রাখতে প্রয়োজন সচেতনতা ও নিয়মানুবর্তিতা। বেশ কয়েকটি নিয়মকে প্রতিদিনের রুটিনে নিয়ে আসতে পারলে মাইগ্রেনের সমস্যা নিয়ে খুব বেশি ভাবতে না।
যথাসম্ভব উষ্ণ থাকার চেষ্টা করা
শীত ও ঠান্ডা বাতাসের হাত থেকে নিজেকে যথাসম্ভব বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ঠাণ্ডা আবহাওয়া মাইগ্রেনের সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয় অনেকটা। বিশেষত বাইরে বের হবার আগে মাথায় উলের টুপি বা ক্যাপ পরে নিতে হবে। মাথা, ঘাড় ও কপালের অংশকে বাইরের ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারলে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়বে না।
রোদের আলোর সংস্পর্শে থাকা
শীতকালে স্বাভাবিকভাবেই রোদের আলো পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে যায়। তবে যখনই রোদের দেখা পাওয়া যাবে, চেষ্টা করতে হবে রোদের আলো পোহানোর জন্য। মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ার জন্য রোদের আলো তথা ভিটামিন – ডি এর অভাব সবচেয়ে বেশি দায়ী।
আরও পড়ুন: মা-বাবার এই পাঁচ বদঅভ্যাস সন্তানের জন্য ঝুঁকি!
শীতের মধ্যে যথাযম্ভব ভিটামিন-সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং শীতকালীন সবজি ও ফল রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, কোন বেলায় খাবার খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে না। গবেষণা সুপারিশ করে, খাবার না খাওয়ার ফলে মাইগ্রেনের ব্যথা তীব্র আকারে দেখা দেয়।
নিজেকে রাখতে হবে অ্যাকটিভ
শীতকালে যদিও কম্বল মুড়ি দিয়ে থাকতে ভাল লাগে, কিন্তু সেই অভ্যাস যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। নিজেকে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক কাজের সঙ্গে জড়িত রাখার চেষ্টা করতে হবে। সেটা হতে পারে হাঁটাচলা, সাইকেল চালানো কিংবা দড়িলাফ দেওয়া।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা
জানেন কি, শীতকালেও শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়া খুব সহজেই শরীরকে শুষ্ক করে তোলে। পানির অভাবে স্বাভাবিকভাবেই মাথা ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়। সেখানে যদি মাইগ্রেনের সমস্য থাকে, তবে তা প্রকট আকার ধারণ করবেই। তাই দিনভর পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার চেষ্টা করতে হবে।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাকের যে লক্ষণ একমাস ধরেও দেখা দিতে পারে!
সোডিয়াম গ্রহণ থেকে দূরে থাকা
শীতকালে গরম পানীয় ও স্যুপ খেতে দারুণ ভালোলাগে। শীতকালীন সবজী ও মুরগীর মাংসের স্যুপ ধোঁয়া ওঠা স্যুপ যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যসম্মত। তবে খেয়াল রাখতে হবে টেস্টিং সল্টের বিষয়ে। সোডিয়াম ও MSG অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করা হলে মাইগ্রেনের ব্যথা বেড়ে