দেশটিতে তৃতীয় প্রান্তিকে ৪ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থাকলেও চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ। সূত্র বলছে, চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থনীতি ধীর হওয়ার পেছনে উৎপাদন খাতের বার্ষিক ৩ শতাংশ সংকোচন অন্যতম দায়ী। দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে ১ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়লেও চতুর্থ প্রান্তিকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চিত্র বিপরীত। এর কারণ হিসেবে এমটিআই জানিয়েছে ইলেকট্রনিকস, রাসায়নিক ও বায়োমেডিকেলের উৎপাদন কমেছে।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক ওভারসিজ চাইনিজ ব্যাংকিং করপোরেশন (ওসিবিসি) ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ সেলেনা লিং বলেন, উৎপাদন খাতের সংকোচন ২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের পর প্রথম ছিল। বৈশ্বিক মন্দায় উদ্বেগ বাড়ছে এবং সে সঙ্গে ইলেকট্রনিকস পণ্যের চাহিদাও কমছে। বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে এর প্রভাব পড়েছে।
এমটিআই জানিয়েছে, অক্টোবর-ডিসেম্বরে দেশটির নির্মাণ খাত এক বছর আগের তুলনায় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এ হার তৃতীয় প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশের চেয়ে বেশি। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই নির্মাণ খাতের উৎপাদনে পুনরুদ্ধার অব্যাহত রয়েছে।
দেশটিতে চতুর্থ প্রান্তিকে পরিষেবা খাতের মধ্যে পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য, পরিবহন ও সঞ্চয় খাত সামগ্রিকভাবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। এ হার তৃতীয় প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭ শতাংশের তুলনায় ধীর। তবে চতুর্থ প্রান্তিকে বাসস্থান, খাদ্য, রিয়েল এস্টেট, প্রশাসন ও সহায়তা পরিষেবা খাতগুলো সম্মিলিতভাবে ৮ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে তৃতীয় প্রান্তিকে খাতগুলো ৯ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছিল।
২০২১ সাল থেকে সিঙ্গাপুরের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়েছে। তবে ২০২২ সালে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এমটিআইয়ের প্রত্যাশিত ৩ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাক্কলনের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। পরিষেবা খাত এক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চতুর্থ প্রান্তিক ও ২০২২ সালের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পরিসংখ্যান আগামী ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ২০২২ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত প্রাক্কলনে বলা হয়, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০২১ সালের ৬ শতাংশের পর ২০২২ সালে ৩ দশমিক ২ শতাংশে নেমেছে। ২০২৩ সালে তা ২ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসতে পারে। সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা সতর্ক করেছেন, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালের বিশ্ব অর্থনীতি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্কলেস ব্যাংকের সিঙ্গাপুর ইউনিটের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ব্রায়ান ট্যান বলেন, উৎপাদন ও বাণিজ্য কার্যক্রমের মন্দা চলতি বছরেও অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধার সিঙ্গাপুরের পরিষেবা খাতকে প্রসারিত করবে।
অর্থসংবাদ/কেএ