গত মঙ্গলবার দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের উপস্থিতিতে দেশটির জাতীয় সঙ্গীত বাজিয়ে জাদুঘরটির উদ্বোধন করা হয়।
‘মিউজিয়াম অব দ্য ফিউচার’ সম্পর্কে টুইটারে তিনি লিখেন, ‘এ জাদুঘর আকাক্সক্ষার বার্তা দেয়, পরিচয় প্রদর্শনের মাধ্যম, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান প্লাটফর্ম এবং আমাদের সবার জন্য সুন্দর ও আলোকিত ভবিষ্যৎ অর্জনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান।’ ডিজাইন ও প্রযুক্তির নিত্যনতুন আবিষ্কার চোখের সামনে তুলে ধরবে এ জাদুঘর। এখানে ২০৭১ সালের আগামীতে ঘুরে আসতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
দুবাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা শেখ জায়েদ মহাসড়কের পাশেই চন্দ্রাকৃতির দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটিই ‘মিউজিয়াম অব দ্য ফিউচার’। ভবনটির শরীরজুড়ে চমকপ্রদ সৌন্দর্যে আরবি ক্যালিওগ্রাফি। তাতে কী লেখা আছে তার প্রতি আগ্রহ সবার। মূলত সেখানে শেখ মোহাম্মদ ইবনে রশিদ আল মাকতুমের তিনটি অনুপ্রেরণামূলক বাক্য লেখা হয়েছে। বাক্যগুলোর মর্মার্থ হলো- ‘আমরা কয়েকশ’ বছর বাঁচব না, তবে আমরা এমন কিছু কাজ করতে পারি যা অনেক বছর স্থায়ী হতে পারে।’
দ্বিতীয় বাক্যটি হচ্ছে, ‘ভবিষ্যৎ তাদের জন্য যারা চিন্তা করে, পরিকল্পনা করে এবং পরিকল্পনামাফিক কাক্সিক্ষত ওই কাজ বাস্তবায়নও করে, ভবিষ্যৎ কারো জন্য অপেক্ষা করে না, ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের এখনই সময়।’
তার তৃতীয় ও শেষ কথাটি হলো, ‘জীবন পুনর্গঠন, সভ্যতার উন্নতি এবং মানবতার অগ্রগতির রহস্য একটি কথার মধ্যে নিহিত, তা হচ্ছে- উদ্ভাবন।’ আমিরাতিরা আরবিতে এটিকে ‘মুতহাফ-আল-মুস্তাকবাল’ বলেন। এটির উচ্চতা ৭৭ মিটার এবং ৩০ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে এর অবস্থান। অভ্যন্তরীণ খুঁটিবিহীন উপবৃত্তাকার ফাঁপা এ স্থাপনাটি সাত তলাবিশিষ্ট। নির্মাণ ও নকশায় এটি অদ্বিতীয়। জাদুঘরে প্রবেশের জন্য তার দুদিকে দুটি সেতু স্থাপিত হয়েছে।
৬৯ মিটার লম্বা প্রথম সেতুটি গিয়ে মিশেছে পাশের নান্দনিক আমিরাত টাওয়ারের সাথে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে জমজ এ ভবনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও নামকরা। দুটির উচ্চতা যথাক্রমে ৩৫৫ ও ৩০৯ মিটার। আকাশচুম্বী ভবনটি গোটা বিশ্বে ৪৭তম সুউচ্চ স্থাপনার স্বীকৃতি পেয়েছে। দ্বিতীয় সেতুটি জাদুঘরকে আমিরাত টাওয়ার মেট্রো স্টেশনের সাথে সংযুক্ত করেছে।
জাদুঘরটি তার অনন্য সৌন্দর্যের কারণে উদ্বোধনের আগেই বিশ্বব্যাপী বেশ প্রসিদ্ধি অর্জন করে। এটির আলোকসজ্জা ও পরিচালনার জন্য ৪০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার একটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। জাদুঘর চত্বরের উদ্যানটিতে অন্তত ৮০ প্রজাতির বাহারি উদ্ভিদ আছে।