মহামারীর শুরুর দিকেই বাড়তে শুরু করে বৈশ্বিক ঋণ। করোনার সময়ে সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। সুদের হার অল্প হওয়ার কারণে বেড়েছে ঋণের বোঝা। কিন্তু বর্তমানে দেখা দিয়েছে বিপরীত চিত্র। মন্দাবস্থা মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাড়িয়ে দিয়েছে সুদের হার। তাতে ঋণের অবনমন ঘটেছে। মূলত শিল্পোন্নত দেশগুলোয় বাজার সংকোচন এক্ষেত্রে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। গত বছরের শেষদিকে ঋণ ২০০ ট্রিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। অথচ ২০২১ সালেও তার পরিমাণ ২০৬ ট্রিলিয়ন ডলার ছিল। এদিকে সুদহার বৃদ্ধি সত্ত্বেও উদীয়মান বাজারে ঋণগ্রহণ বেড়েছে। গত বছর এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৯৮ ট্রিলিয়ন ডলার। আইআইএফ দাবি করেছে, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত, মেক্সিকো ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোয় বেড়েছে ঋণের মাত্রা।
এদিকে গত বছরের শেষে জিডিপির বিপরীতে ঋণের হার ১২ শতাংশীয় পয়েন্ট অবনমন ঘটেছে। বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৩৩৮ শতাংশে। উন্নত বিশ্বের বাজারে এ হার ২০ শতাংশীয় পয়েন্ট নেমে ঠেকেছে ৩৯০ শতাংশে। ইউরোপিয়ান দেশগুলোর বাজারে অবনমনের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে সাইপ্রাস, নরওয়ে ও যুক্তরাজ্য এক্ষেত্রে এগিয়ে। যদিও সার্বিক বিবেচনায় জিডিপির বিপরীতে ঋণের অনুপাত ২ শতাংশীয় পয়েন্ট বৃদ্ধি ঘটেছে। দাঁড়িয়েছে ২৫০ শতাংশে। ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক ঋণ ৩০৬ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করেছিল। দ্রুতই তা বিপরীতমুখী হয়। যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মতো ২০২২ সালে সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ বাড়িয়েছে সুদের হার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও গ্রহণ করেছে একই নীতি। বিশ্বজুড়ে মন্দার সুযোগে কমেছে করপোরেট ঋণের সূচক। যদিও ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অ-অর্থনৈতিক করপোরেট ঋণ ২০ ট্রিলিয়ন ডলারে উত্তীর্ণ হয়েছে, যা ২০২১ সালে ছিল ১ দশমিক ৭ ডলার।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এক পূর্বাভাসে জানায়, ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ২ দশমিক ৯ শতাংশ সম্প্রসারিত হবে। গত অক্টোবরের পূর্বাভাসের চেয়ে যা শূন্য দশমিক ২ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি।
অর্থসংবাদ/এসএম