সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী, কোনো সিটির মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ৫ বছর। কোনো সিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণ করতে হয়। সেক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির পরবর্তী ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে চলতি মাসের ১১ মার্চ থেকে। ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
অপরদিকে, খুলনা ও রাজশাহী সিটির ক্ষণগণনা শুরু হবে আগামী ১৩ এপ্রিল থেকে। ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ১০ অক্টোবরের মধ্যে। বরিশাল সিটি ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে ১৪ মে থেকে ১৩ নভেম্বর। আর সিলেট সিটি ৬ মে থেকে পরবর্তী নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হবে। ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ৬ নভেম্বরের মধ্যে। ময়মনসিংহ সিটি ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে ২০ ডিসেম্বর। ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ১৯ জুন ২০২৪ সালের মধ্যে।
ইসি মো. আলমগীর বলেন, ‘আগামী জুনে দুইটি সিটি কর্পোরেশনে এবং বাকি তিনটি সিটি কর্পোরেশনে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোট শেষ করব। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তফসিলের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি আমাদের। যেটা আলোচনা হয়েছিল গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটের। এইগুলোর নির্বাচনগুলো সেগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে করতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘এ বছরের ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যেহেতু জাতীয় নির্বাচন আছে, সেজন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে এ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন শেষের দিকে না করে প্রথম দিকে করা। জাতীয় নির্বাচনের জন্য অনেক বিষয়ে প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। এজন্য আমরা সেটাই করব। গাজীপুরের ব্যাপারে শুধু ওইটুকু আলোচনা হয়েছে। তবে তফসিল কবে এ ধরণের কোনো আলোচনা হয়নি।’
চলতি মাসের ১১ মার্চ থেকে ১০ সেপ্টেম্বরে গাজীপুরে ভোটের সময় জানিয়ে এ কমিশনার বলেন, ‘যেকোনো সময়ে নির্বাচন হতে পারে। সে হিসেবে যেহেতু জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। সেহেতু নির্বাচনগুলো আগে করার চেষ্টা করব। মার্চের পরে যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে।’
চার সিটির ভোট একদিনে হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এ কমিশনার বলেন, ‘একদিনে হবে না। ছয়টি সিটি আছে। তার মধ্যে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনেক দেরি। ওইটাকে আমরা হিসেবের মধ্যে আনছি না। বাকি পাঁচটার ক্ষেত্রে হয়তো দুইদিন অথবা তিনদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত হতে পারে।’
জুন মাসের মধ্যে দুই সিটি ভোট করার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘করার ইচ্ছা আছে। তবে এখন পর্যন্ত দিন তারিখ ঠিক হয়নি। চূড়ান্ত কিছু হয় নি। যেগুলো আগে ক্ষণগণনা শুরু হবে সেগুলো আগে হবে।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, ‘গাজীপুর নিয়ে আমরা (কমিশন) কোনো তফসিল ঘোষণা করিনি। জুনের আগে আগে দুই একটা সিটি ভোট হবে। বাকিগুলো জুনের পরে হবে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিটি ভোট শেষ করব।’
সিটি নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এ কমিশনার বলেন, ‘এগুলো নির্ভর করবে বাজেটের ওপর। আমরা বাজেট চাইব। টাকা পেলে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করব।’
সিটি ভোটগুলোতে ইভিএম ব্যবহার করার আগ্রহ আছে জানিয়ে সাবেক এ সচিব বলেন, ‘এটা ডিপেন্ড করবে। নতুন ইভিএম আসেনি। ইভিএমগুলোর ব্যাটারির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, ব্যাটারি রিপ্লেসমেন্টসহ সার্ভিসিং করাতে হবে। সেজন্য টাকা লাগবে। সার্ভিসিং করিয়ে যদি সচল করতে পারি তাহলে তার ওপর নির্ভর করবে কতগুলো ইভিএম ব্যবহার করব। তবে কমিশনের ইচ্ছা ইভিএমে করা।’
সরকারের ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপর সিসি ক্যামেরা নির্ভর করছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা ভোটের অনুষঙ্গ নয়। আইনের কোথাও বলা নেই সিসি ক্যামেরা রাখতে হবে। এটা বাড়তি ব্যবস্থা এবং পরীক্ষামূলক ছিল। টাকা পেলে সব আসনে না করলেও ঝুঁকিপূর্ণ আসনে করব। সরকার থেকে আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া পাইনি। দলের কেউ মন্তব্য করতেই পারে। দলের সাথে সরকারের মন্তব্যের রিলেশন করা যাবে না। সরকার আর দল কিন্তু এক নয়।’