বৃহস্পতিবারের (১৬ মার্চ) পর আর নিবন্ধন করা যাবে না বলে আগেই জানিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।
অতিরিক্ত খরচের কারণে এবার হজযাত্রী নিবন্ধনে আগ্রহ কম প্রাক-নিবন্ধিতদের। এরই মধ্যে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় তিনদফা বাড়ানো হয়েছে।
চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তখন কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হন।
সবশেষ নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নিবন্ধনের সময় এটাই শেষবারের মতো বাড়ানো হলো। এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না।
হজ পোর্টালের ১৫ মার্চ সকাল ১০টার পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৯২ হাজার ১৪৮ জন এবছর হজে যেতে নিবন্ধিত হয়েছেন। এরমধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৪৩১ জন ও বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে ৮২ হাজার ৭১৭ জন নিবন্ধিত হয়েছেন।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের নিয়ম রাখা হয়েছে। এবার সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এরসঙ্গে যুক্ত হবে কোরবানির খরচ। হজে যাওয়ার এ খরচ বহন করা অনেকেরই সাধ্যের বাইরে।
এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও সৌদি এয়ারলাইনস ছাড়া অন্য কোনো বিমানে হজযাত্রী যাওয়ার সুযোগ না রাখা ও হজযাত্রীদের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা বেশি ভাড়া নেওয়ার ঘটনাকে ‘অমানবিক’ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয়কে একটি ‘অথর্ব মন্ত্রণালয়’ বলে মূল্যায়ন করেছেন আদালত। এ সময় হজের খরচ বাড়ার বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্ট ক্ষোভও প্রকাশ করেন।
‘হজ প্যাকেজ ২০২৩’ সংশোধন করে খরচ পুনরায় নির্ধারণে করা রিটের শুনানির দিন ধার্য করার সময় মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। বুধবার (১৫ মার্চ) এ বিষয়ে শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট বলেছেন, এত টাকা লাগলে সাধারণ মানুষ কীভাবে হজে যাবে? বিশ্বের অন্যান্য দেশে হজের জন্য সরকার আলাদা বরাদ্দ রাখে, আমাদের এটি নেই কেন? বিশ্বের অন্যান্য দেশে হজের জন্য সরকার আলাদা বাজেট রাখে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি নেই। হজের প্যাকেজ মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় আমরা হজে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আর গরিব মানুষরা কীভাবে যাবে?
গত ১২ মার্চ হজের প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে পুনরায় প্যাকেজ ঘোষণা করতে রিট করা হয়। রিটে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্স ছাড়াও যে কোনো এয়ারলাইনসে টিকিট কেটে হজে যাওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।