মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ঢাকায় প্রকাশিত 'স্ট্রাইভিং ফর ক্লিন এয়ার: এয়ার পলিউশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন সাউথ এশিয়া' শীর্ষক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং দরিদ্র কিছু এলাকায় বায়ুতে সূক্ষ্ম কণা পদার্থ, যেমন- ধুলিকণার (পিএম) ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানের চেয়ে অন্তত ২০ গুণ বেশি।
বিশ্বে বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষ ১০ শহরের মধ্যে ৯টিই দক্ষিণ এশিয়ার। এরমধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা অন্যতম। তবে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, এ অঞ্চলে বায়ু দূষণ ঠেকাতে সাশ্রয়ী ও ব্যয়-কার্যকর সমাধান রয়েছে; তবে এর জন্য দেশগুলোর মধ্যে কার্যকর নীতি নির্ধারণ এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমন্বয় প্রয়োজন।
দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ু দূষণে প্রতি বছর আনুমানিক ২ কোটি লোকের অকালমৃত্যু হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এছাড়া, দূষণে আক্রান্ত হয়ে নানান ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভোগেন এ অঞ্চলের মানুষ। বায়ু দূষণের কারণে স্থবিরতা ও স্নায়ুবিক বিকাশ হ্রাস, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণসহ দীর্ঘস্থায়ী নানান রোগ দেখা দেয় শিশুদের মধ্যে। এতে করে বেড়ে যায় স্বাস্থ্যসেবার ব্যয়, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের উত্পাদনশীলতা কমানোর পাশাপাশি মানুষের কর্মক্ষমতাও হ্রাস করে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেছেন, "বায়ু দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।"
"তবে প্রতিশ্রুতি, যথাযথ পদক্ষেপ ও নীতির মাধ্যমে বায়ু দূষণ মোকাবেলা করা সম্ভব; বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি অনুমোদনসহ বায়ুর গুণমানের উন্নতি সাধনে পদক্ষেপ নিয়েছে। শক্তিশালী জাতীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি, আন্তঃসীমান্ত (পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে) সমাধান বায়ু দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশ্লেষণমূলক কাজ এবং নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে বায়ু দূষণ কমাতে সাহায্য করে যাচ্ছে," যোগ করেন তিনি।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশ এ অঞ্চলের বায়ুর গুণমান উন্নত করতে দেশ ও জেলা পর্যায়ে বেশকিছু নীতি গ্রহণ করেছে; তবে যেহেতু বায়ু দূষণ একটি আন্তঃসীমান্ত সমস্যা, তাই দেশ-ভিত্তিক পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোকে সমন্বিতভাবে আন্তঃসীমান্ত পদক্ষেপ নিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে।