জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের বাজুপাড়া গ্রামের লুতফর রহমানের ছেলে এবাদুল ইসলামের বউভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আসার জন্য দাওয়াত দেওয়া হয় তিন শতাধিক মানুষকে। সেই দাওয়াতে নানা উপহারসামগ্রী নিয়ে বরের বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন অতিথিরা। তবে তাদের উপহার গ্রহণের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না সেই অনুষ্ঠানে। ফলে খাওয়া-দাওয়া শেষে বাধ্য হয়েই সঙ্গে আনা উপহার ফেরত নিতে হয়েছে সবাইকে।
এ বিষয়ে বরের বাবা লুতফর রহমান বলেন, দাওয়াতে আসা অতিথিদের আমরা যথাসাধ্য আপ্যায়নের চেষ্টা করেছি তবে তাদের আনা উপহার গ্রহণ করিনি। দাওয়াত করে মানুষকে এনে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে উপহার নেওয়ার রীতি আমি একদমই পছন্দ করি না। আমি মনে করি খাবার খাইয়ে কোনো কিছু গ্রহণ করার মধ্যে কোনো আতিথেয়তা কিংবা আন্তরিকতা থাকে না। তাই উপহার গ্রহণ না করে বহুদিনের এই রীতিতে পরিবর্তন আনতে চেয়েছি মাত্র।
বরের বড় ভাই লালচান হোসাইন লাভলু বলেন, সামাজিকতা ও মানসম্মানের কথা চিন্তা করে কষ্ট হলেও অনেকেই দাওয়াতে উপহার নিয়ে আসেন। এটি একটি অমানবিক সামাজিক রীতি। এই রীতি বর্জন করতেই ছোট ভাইয়ের বউভাতে কোনো উপহার নেওয়া হয়নি।
আব্দুর রব নামে এক অতিথি বলেন, বিয়ে কিংবা বউভাতের সব অনুষ্ঠানেই উপহার নিয়ে যাই। এখানে তাই করেছি কিন্তু তা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এতে অবাক হয়ে জানতে চাইলে বরের বাবা জানিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানে কোনো উপহারই নেওয়া হচ্ছে না। পরে সেই উপহার বাসায় ফেরত আনতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শেরপুরের সাধারণ সম্পাদক মানিক মিয়া বলেন, আমাদের সমাজের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী উপহার ছাড়া বিয়ে বা বউভাতের দাওয়াতে যান না কেউ। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী উপহার বা নগদ টাকা দিয়ে দাওয়াত রক্ষা করেন। মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত অনেকের হাতে সব সময় টাকা থাকে না। কিন্তু দাওয়াত রক্ষার্থে সম্মানের খাতিরে তারা ধারদেনা করে হলেও উপঢৌকন জোগাড় করেন। এ রীতি থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৪ এপ্রিল) একই ইউনিয়নের উত্তরবন্দ গ্রামের আমের আলীর মেয়ে আয়েশা বেগমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবাদুল ইসলাম।