সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক এই ঋণদাতার শেয়ারের দাম গত সপ্তাহে ৭৫ শতাংশেরও বেশি কমেছে। এর আগে তারা স্বীকার করে, গ্রাহকরা মার্চ মাসে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আমানত তুলে নিয়েছে।
ফার্স্ট রিপাবলিক হলো সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পতনের শিকার তৃতীয় মার্কিন ব্যাংক, যা বৃহত্তর ব্যাংকিং সংকটের আশঙ্কাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। এর আগে গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক এবং সিগনেচার ব্যাংকের পতন হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংককে বাঁচাতে ছয়টি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জেপি মরগান চেজের প্রধান নির্বাহী জেমি ডিমন বলেছেন, সরকার অন্যদের সঙ্গে ব্যাংকিং জায়ান্টকে ‘পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ’ জানিয়েছে এবং ‘আমরা গ্রহণ করেছি’। তিনি আরো বলেন, এই অধিগ্রহণ সংস্থাটিকে ‘পরিমিত সুবিধা দেবে’ এবং বিদ্যমান ব্যবসার জন্য ‘পরিপূরক’ হবে।
জেপি মরগানের এক বিবৃতি থেকে জানা যায়, তারা ফার্স্ট রিপাবলিকে থেকে ১৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ, প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার এবং ৯২ বিলিয়ন ডলারের আমানত নেবে। এ ছাড়া চুক্তির অংশ হিসেবে এফডিআইসি ঋণের ক্ষতি জেপি মরগানের সঙ্গে ভাগ করে নেবে। অনুমান করা হয়েছে, এই চুক্তিতে বীমা তহবিল প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি করবে।
নিয়ন্ত্রকদের নিয়ন্ত্রণ দখল এবং অবিলম্বে ওয়াল স্ট্রিট প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করার পর আটটি অঙ্গরাজ্যে এই ব্যর্থ ব্যাংকের ৮৪টি কার্যালয় সোমবার থেকে জেপি মরগান চেজ ব্যাংকের শাখা হিসেবে পুনরায় খুলবে।
১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ফার্স্ট রিপাবলিক সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের মতোই একটি মাঝারি আকারের মার্কিন ঋণদাতা। তারা বছরের পর বছর ধরে ধনী ক্লায়েন্টদের সেবা দিয়েছে, যাদের অর্থ এই চুক্তি ঘোষণার আগে ঝুঁকিতে ছিল।
যখন সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক এবং সিগনেচার ব্যাংক ভেঙে পড়ে, তখন এফডিআইসি বলেছিল, তারা সমস্ত আমানতের গ্যারান্টি দেবে, যাতে মানুষ তাদের টাকা উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা না করে। এ ছাড়াও ওই একই মাসে সুইস কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা করা একটি চুক্তিতে ইউরোপে ব্যাংকিং জায়ান্ট ক্রেডিট সুইস প্রতিদ্বন্দ্বী ইউবিএস কিনে নিয়েছিল।
মূল্যবৃদ্ধির হার কমানোর জন্য বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো আক্রমনাত্মকভাবে সুদের হার বাড়িয়েছে, যা মুদ্রাস্ফীতি হিসেবে পরিচিত। এতে কিছু ঋণদাতা চাপের মধ্যে পড়েছে। যখন এই হার কম ছিল তখন ব্যাংকের কেনা বন্ডের বৃহৎ পোর্টফোলিওগুলোর মানকে বর্ধিত সুদের হার আঘাত করেছে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিকে ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পুনরাবৃত্তি বলে মনে করা হচ্ছে না। কারণ এখন সিস্টেমব্যাপী সমস্যা নেই। ওই সময় সারা বিশ্বের ব্যাংকগুলো হঠাৎ দেখতে পেয়েছিল, তারা মার্কিন আবাসন মার্কেটে খারাপ বিনিয়োগের সম্মুখীন হয়েছে। পরে তা বিশাল সরকারি আর্থিক পতন এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার দিকে পরিচালিত হয়।