যশোরের উদ্যোক্তা খালিদ হাসানের প্রতিষ্ঠান খালিদ আইটিতে করা হয়েছে এমন অদ্ভুত নিয়ম। চলতি মাসের ৫ তারিখ খালিদ তার ফেসবুক প্রোফাইলে নিজ প্রতিষ্ঠানের সময়সূচি নিয়ে এমন একটি পোস্ট দেন।
খালিদের পোস্টে বলা হয়েছে, মে মাস থেকে আমাদের অফিস শুরু হবে ফজরের নামাজের জামাতের পর এবং চলবে জোহরের নামাজের পর এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত।
এ বিষয়ে খালিদ বলেন, ফজরের নামাজ শেষে ভোরের সূর্যোদয় দেখার সৌভাগ্য হয় না অনেকেরই। সেখান থেকেই মাথায় এমন আইডিয়াটা এলো। এখানে আমরা সবাই নামাজ পড়ে আর না ঘুমিয়ে কাজ শুরু করি। দুপুরে জোহরের পরপর কাজ শেষ করে ফেলি।
অফিসের কর্মীরা ব্যাপারটি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে খালিদ বলেন, শুরুতে অনেকের খাপ খাওয়াতে সমস্যা হলেও এখন কর্মীরা নিয়মটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। অনেক সময় দেখা যায় আমার ঘুম ভাঙতে দেরি হলে, তারাই আমাকে ঘুম থেকে তুলে দেয়।
বর্তমানে খালিদ হাসানের অফিসে ১১ জন কর্মী আছেন। খালিদ নামাজের কথা উল্লেখ করায় ভিন্ন ধর্মালম্বীদের জন্য কী ব্যবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কদিন আগেও সনাতন ধর্মের একজন এখানে কাজ করতেন। সরকারি চাকরি হওয়ায় তিনি অন্যত্র চলে গেছেন। আমার প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতানুসারে যেকোনো ধর্মের মানুষ কাজ করতে পারবেন।
যোগ্যতার ব্যাপারে খালিদ বলেন, ‘আমরা মূলত কর্মীদের নিজেদের মতো করে গড়ে তুলি। এ প্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ কর্মী আগে জানতোই না কীভাবে কম্পিউটার ওপেন করতে হয়। এরা একেকজন এখন ফ্রিল্যান্সার। আমরা চাকরির শুরুতে ১০ দিনের ফ্রি ট্রেনিং দিয়ে থাকি। এরপর থেকে তার চাকরির সময়কাল শুরু হয়।’
কীভাবে স্টার্টাপের চিন্তা মাথায় এলো জানতে চাইলে খালিদ বলেন, ‘অনেকেই এখন ব্যাংক-বিসিএসের মতো সরকারি চাকরির পেছনে দৌড়ে মরেন। আমি ভিন্ন কিছু করতে চেয়েছি। একটা সময় ছিল ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় বৃত্তি গাইড কেনার মতো শখানেক টাকা আমার হাতে ছিল না। আমি টাকা ধার নিয়ে পড়ার জন্য গাইড কিনেছিলাম। এখন আমার কর্মীদের মাসিক বেতন-ভাতা ও অফিস ভাড়া দিয়ে মাসে লাখখানেক টাকা থাকে।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে খালিদ জানান, তিনি দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে চান। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন খালিদের।