বুধবার (২৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। নির্দেশনাটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, বে-মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে বিবেচ্য মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটের সারেন্ডার প্রাইস (সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কাছে ইউনিট ফেরত দেওয়ার মূল্য) গড় ক্রয় মূল্য অপেক্ষা কম হলে, গড় ক্রয় মূল্য ও সারেন্ডার প্রাইসের পার্থক্যের সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এসব নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে এবং প্রভিশন সংরক্ষণের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল করতে হবে।
এ নির্দেশনা জারির পর থেকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একধরনের বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে এবিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম অর্থসংবাদকে বলেন, প্রভিশন সংরক্ষনের হিসাব বা নিয়ম আগের নিয়মেই হবে, যেটা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে। এখন শুধু যুক্ত হলো মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও পারপেচ্যুয়াল বন্ড, যা আগে ছিলনা। যেহেতু বাজারে খুব শিগগিরই পারপেচ্যুয়াল বন্ড সহ সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেন শুরু হবে। তাই ব্যাংকগুলোকে সুর্নিদিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনা দিয়ে ভালো কাজ করেছে। ব্যাংকগুলো কিভাবে বন্ডের প্রভিশন সংরক্ষন করবে তা নিয়ে আর কোন সংশয়ের অবকাশ থাকলোনা।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হিসাবে স্থিতিপত্রের বিভিন্ন দফার মধ্যে সরকারি সিকিউরিটিজ বাদে অন্যান্য সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে সর্বশেষ বাজারমূল্য ক্রয়মূল্যের চেয়ে কম হলে ক্রয়মূল্য ও সর্বশেষ বাজারমূল্যের পার্থক্যের সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। দামের এই পার্থক্যকে বিনিয়োগের মূল্য কমার ক্ষতি হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। তালিকাভুক্ত শেয়ার, বন্ড, ডিবেঞ্চার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা কোন তহবিলের ক্ষেত্রে এই শর্ত প্রযোজ্য।
এছাড়া ইক্যুইটি শেয়ার, বন্ড, ডিবেঞ্চার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা তালিকাভুক্ত কোন তহবিলের প্রতি ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রভিশন সংরক্ষণ করা যাবে। অ-তালিকাভুক্ত ইক্যুইটি শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানিটির মোট মূল্য কমলে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগের আনুপাতিক হারে হ্রাসকৃত মূল্যের সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। বিনিয়োগকৃত কোম্পানিটির অস্তিত্ব না থাকলে, কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে বা দৃশ্যমান কার্যক্রম পরিলক্ষিত না হলে বিনিয়োগের সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, নন-কনভার্টিবল কিউমুলেটিভ প্রেফারেন্স শেয়ারের ক্ষেত্রে চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংকের প্রাপ্য নির্ধারিত সুদ, মুনাফা বা নগদ লভ্যাংশ পাওয়া না গেলে প্রথম বছর শেষে আসল পরিমাণের উপর ২৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হবে। দ্বিতীয় বছরের জন্য অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ এবং তিন বছর লভ্যাংশ অপরিশোধিত থাকলে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জারি করা এ নির্দেশনা আগামী ৩০ জুন থেকে কার্যকর হবে।