আজ বুধবার ( ২৪ মে) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন: দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সার্কের গুরুত্ব’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসসিসিআই)।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের ইএসসিএপির দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া অফিসের ডেপুটি হেড এবং সিনিয়র ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের কর্মকর্তা ড. রাজন সুদেশ রত্ন এক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সার্কের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রয়োজন ছিলো তা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, সার্ক সদস্যভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। যৌথ উদ্যোগের অভাবে তা করা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি এবং পোশাক খাতে দক্ষিণ এশিয়া আগামী এক দশকে নেতৃত্ব দেবে। তা শুধু এক দশকের জন্য নয়, আগামী দিনগুলোতে এসব খাত দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃত্বে থাকবে। এর জন্য জ্বালানি, পরিবহন ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ, সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে এই অঞ্চল অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। যদিও আগের তুলনায় ভালো করছে সার্কভুক্ত দেশগুলো। এর জন্য এসসিসিআইয়ের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় ভালো যোগাযোগ তৈরির করার মাধ্যমে সার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভালো যোগাযোগ থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে উল্লেখ করেন রাজন রত্ন।
এফবিসিসিআইর সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, সার্কের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের অমিত সম্ভাবনা বিরাজ করছে। চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক বাণিজ্যের বিশাল এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। এর জন্য আঞ্চলিক বাণিজ্য জোরদারে সদস্য দেশগুলোকে আরও উদ্যোগী হতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্ক স্থাপন করা গেলে এই অঞ্চল হতে পারে বিশ্বের অন্যতম গতিশীল ও উদীয়মান শক্তি। এই লক্ষ্যে শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এবং সংস্থাগুলোকে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।
এসসিসিআইর (শ্রীলংকার) প্রাক্তন সভাপতি রুয়ান এদিরিঙ্গে বলেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর বিপুল জনশক্তি, বিশাল বাজার, পর্যাপ্ত খনিজ সম্পদ ও কাঁচামাল রয়েছে। অথচ এসব সম্পদকে আমরা এখনও কাজে লাগাতে পারিনি। বাণিজ্য সম্প্রসারণে সার্ক চেম্বারের সদস্যদের নিজ নিজ দেশের ব্যবসায়ী নেতৃত্ব এবং সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।
এসসিসিআইর (পাকিস্তান) সহ-সভাপতি আঞ্জুম নিসার বলেন, অন্যান্য আঞ্চলিক জোটগুলো তাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে জোরালোভাবে কাজ করছে। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমরা এখনও সার্কের মতো এত সম্ভাবনাময় একটি জোটকে কাজে লাগাতে পারিনি।
পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম. মাশরুর রিয়াজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মালদ্বীপের প্রাক্তন মন্ত্রী মরিয়ম শাকিলা, এসসিসিআইর (নেপাল) ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নেপাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফএনসিসিআই) সাবেক সভাপতি চন্ডি রাজ ঢাকাল, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় বসু, আফগানিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য জানাকা সিদ্দিকী প্রমুখ।