বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের এই পদক্ষেপ স্থানীয় ওষুধ ও মেডিক্যালশিল্পকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতও তার সুফল পাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসের ওষুধের কাঁচামাল শূন্য শুল্ক দিয়ে আমদানি করা গেলে এসব ওষুধের দাম অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে।
জানা গেছে, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসের ওষুধের জন্য একশোরও বেশি ধরনের কাঁচামাল আমদানি করে বাংলাদেশ এবং এরমধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশ কাঁচামাল ক্যান্সারের ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে ক্যান্সারের ওষুধ উৎপাদনের মাত্র ৩০ শতাংশ কাঁচামালে আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দেয় সরকার।
জানা গেছে, চিকিৎসাকে আরও সাশ্রয়ী করতে সরকার বিদ্যমান শুল্ক মওকুফের তালিকায় অ্যান্টি-ক্যান্সার এবং অ্যান্টি-ডায়াবেটিস ওষুধের আরও কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছে। এর মধ্যে ইন্ট্রাভেনাস ক্যানুলা তৈরির জন্য সিলিকন টিউব আমদানিতেও শুল্ক রেয়াত দেওয়া হতে পারে।
এছাড়া আগামী বাজেটে তরল নিকোটিন এবং ট্রান্সডার্মাল নিকোটিন প্যাচের উপর ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। পাশাপাশি ই-সিগারেট, ভেপ এবং এ জাতীয় ডিভাইসগুলির ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করতে ২১২.২০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হতে পারে।
২০১৯ সালে বিএমসি হেলথ সার্ভিসেস রিসার্সের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিজন টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীর গড় বার্ষিক চিকিৎসা খরচ ছিল ৯৩,৮১৯.৯৫ টাকা। এরমধ্যে ওষুধের খরচ প্রত্যক্ষ খরচের ৬০.৭ শতাংশ এবং হাসপাতালে ভর্তির খরচ ২৭.৭ শতাংশ।
এদিকে চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরের বাজেটেও স্যানিটারি প্যাড ও ডায়াপারের ওপর থেকে ভ্যাট অব্যাহতি বজায় থাকতে পারে। এনবিআরের সূত্র বলছে, স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পের আরও বিকাশে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত স্যানিটারি প্যাড এবং ডায়াপারের কাঁচামালের ক্ষেত্রে ভ্যাট ছাড় অব্যাহত রাখতে পারে।
এছাড়া সাবান ও শ্যাম্পুর কাঁচামাল লাবসা ও এসএলইস’র উৎপাদন পর্যায়ে বর্তমানের হ্রাসকৃত ৫ শতাংশ ভ্যাট সুবিধা আরও এক বছর বাড়ানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত, দেশে স্যানিটারি বাজার প্রায় ৭০০ কোটি টাকার এবং বার্ষিক ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হারে তা আরও বড় হচ্ছে। এই চাহিদার বেশিরভাগই পূরণ করছে স্থানীয় কোম্পানিগুলো। এছাড়া, ডায়াপারের বাজার প্রায় ৮০০ কোটি টাকার, এর প্রায় ৯০ শতাংশ জোগান দিচ্ছে স্থানীয় উৎপাদকরা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও ওয়াটারএইডের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত 'ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮' অনুসারে, দেশে মাসিকের সময় ২৯ শতাংশ নারী ডিসপোজিবল প্যাড ব্যবহার ব্যবহার করে, ২০১৪ সালের জরিপকালে যা ছিল ১৪ শতাংশ।