বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অর্থসংবাদকে বলেন, জরিতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার প্রথম ধাপ হিসাবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মামলার মাধ্যমে অভিযুক্তদের থেকে লোপাট করা অর্থ উদ্ধার করে বিনিয়োগকারীদেকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে অনিয়মকারীদের কঠিন বার্তা দেওয়া হলো। যাতে কেউ অপরাধ করে পার পেতে না পারে।
সম্প্রতি ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবির) এমডির কাছে এ সংক্রান্ত বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। একই সঙ্গে বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমকেও অবহিত করা হয়েছে।
মিউচুয়াল ফান্ডগুলো হচ্ছে- ইউএফএস—আইবিবিএল শরিয়া ইউনিট ফান্ড, ইউএফএস—পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ড, ইউএফএস—পদ্মা লাইফ ইউনিট ফান্ড এবং ইউএফএস—ব্যাংক এশিয়া ইউনিট ফান্ড।
বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ব্যবস্থাপক ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনস লিমিটেড তার পরিচালিত ফান্ডগুলো থেকে ২০৭ কোটি ৪৮ লাখ ৭৪ হাজার ১১৭ টাকা আত্মসাত করেছে। এ অভিযোগে আলোচ্য সম্পদ ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে আইসিবি ফৌজদারি মামলা দায়ের করে। এ পর্যায়ে সম্পদ ব্যবস্থাপকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের নামের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ এবং বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
এর আগে অর্থ আত্মসাতের মূল আসামি সৈয়দ হামজা আলমগীরসহ ১৫ জনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছিল। এছাড়া, অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (ইউএফএস) লিমিটেডের ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি আইসিবি এ মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) খতিয়ে দেখছে।
অভিযুক্তরা হলেন- অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ইউএফএস, ইউএফএসের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলমগীর ফারুখ চৌধুরী, এমডি সৈয়দ হামজা আলমগীর, পরিচালক ইসরাত আলমগীর, আলিয়া হক আলমগীর, মাহিদ হক, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মোহাম্মদ মাসুম চৌধুরী, মোসাম্মত উম্মে ইসলাম সোহানা, সৈয়দা শেহরীন হোসেন, তারিক মাসুদ খান, সৈয়দা মেহরীন হুসেইনসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জন।
প্রসঙ্গত, ইউএফএসের চার মিউচুয়াল ফান্ড থেকে বিনিয়োগকারীদের ২০৭ কোটি ৪৮ টাকা লোপাটের ঘটনায় সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ইউএফএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হামজা আলমগীরের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন সনদ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আইসিবি ট্রাস্টি এবং কাস্টডিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার দায়ে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া, ফান্ডগুলোর বিধিবদ্ধ নিরীক্ষা ফার্ম আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোং, রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোং এবং সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষকদের বিরুদ্ধে অডিট ও অ্যাসিউরেন্স কার্যক্রম পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অর্থসংবাদ/এসএম