হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (২৯মে) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে এ–সংক্রান্ত রুল হাইকোর্টে দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ওই বিজ্ঞপ্তি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ। এর বৈধতা নিয়ে তিন শিক্ষার্থী গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রিট করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৮ মার্চ হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা গত ৭ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় আজ আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদন নিষ্পত্তি করে ওই আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অমিত তালুকদার। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ।
পরে অমিত তালুকদার বলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হওয়ায় পরীক্ষার্থীর পরিচয় শনাক্তে পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশন চলাকালে শিক্ষার্থীর কানসহ মুখ দৃশ্যমান রাখতে রাখতে হবে। বাংলা বিভাগের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি বহাল রইল। পরীক্ষা চলাচলে পরীক্ষার্থীর পরিচয় শনাক্তে, অর্থাৎ একজনের পরিবর্তে অন্য কেউ যাতে পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারে, সে জন্য বাংলা বিভাগ ওই বিজ্ঞপ্তি দেয়।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ওই বিজ্ঞপ্তি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ। এর বৈধতা নিয়ে তিন শিক্ষার্থী গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রিট করেন।
ওই বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলা বিভাগের একাডেমিক কমিটি সর্বসম্মতভাবে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী বাংলা বিভাগের প্রতি ব্যাচের সংযোগ ক্লাস (টিউটোরিয়াল প্রেজেন্টেশন), মিডটার্ম পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীকে পরিচয় শনাক্ত করার জন্য কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখতে হবে।
বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যানের সই করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এ সিদ্ধান্ত প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষকেরা ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেছেন। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে কোনো কোনো শিক্ষার্থী এ সিদ্ধান্ত পালনে শৈথিল্য দেখাচ্ছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে ১৮ সেপ্টেম্বর গৃহীত ওই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে যাঁরা পালন করবেন না, তাঁদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।