বুধবার (৩১ মে) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
নসরুল হাসিদ বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করার পরেও ওই অর্থবছরে বিপিসি প্রায় দুই হাজার ৭০৫ কোটি টাকার লোকসান দিয়েছে। এখানে বিপিসি সরকার থেকে কোনও ভর্তুকি না নিয়েও আগের মুনাফা থেকে এ লোকসান বহন করেছে।
তিনি বলেন, এ অর্থবছরেও বিপিসি সরকার থেকে ভর্তুকি নেয়নি। পূর্বের মুনাফা হতে লোকসান বহন করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি চালু হওয়ার পর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সব ধরনের ট্যাক্স দিয়ে সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে তিন হাজার ৫১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের উত্তরে নসরুল হামিদ জানান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ নয় হাজার টাকা মুনাফা করেছে। যা ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা বেশি। ওই অর্থবছরে সরকারের মুনাফা অর্জন করেছিল ৩২ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
সরকার দলীয় সংসদ এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, গ্যাস খাতের উন্নয়নে গত ১৪ বছরে বিদেশি কোম্পানিগুলো তিন হাজার ৪৮৩ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ বাংলাদেশে করেছে।
সাতটি বিদেশি কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করেছে জানিয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এর মধ্যে আমেরিকার তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরণ সর্বোচ্চ দুই হাজার ৯৪১ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি তাল্লো দুইশ ৩৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার, একই দেশের কেয়ার্ন এনার্জির বিনিয়োগ দুইশ ৪২ দশমিক ০৭ মিলিয়ন ডলার। চতুর্থ সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে ভারতীয় ওএনজিসি বিদেশ কোম্পানি ৪৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানকোফিলিপস ৬ দশমিক ২২ মিলিয়ন, অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস ৫ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পোসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন বাংলাদেশে ৫ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
নসরুল হামিদ বলেন, দেশের গ্যাস চাহিদা মেটানোর জন্য এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর আলোকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি স্থাপন করা হয়। এক্ষেত্রে সরকার/পেট্রোবাংলার কোনো অর্থ ব্যয় হয়নি। তবে এলএনজি ব্যবহারের জন্য পেট্রোবাংলার নির্ধারিত ফ্রি দিয়েছে। আগামী ১৫ বছর পর এলএনজি টার্মিনাল দুটির মালিকানা সরকার/পেট্রোবাংলার কাছে ন্যস্ত হবে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শাহে আলমের প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে এক হাজার ১৬৯ দশমিক ৭৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যার মধ্যে সৌর বিদ্যুৎ থেকে অফ গ্রিডে ৩৫৭ দশমিক ০৯ মেগাওয়াট এবং অন-গ্রিডে ৫৭৮ দশমিক ৬৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৯৩৫ দশমিক ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।