রাশিয়ান পাইপলাইনের মাধ্যমে ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই। তবে যে পথে জ্বালানি সরবরাহ করা হয় সেটি ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে। গত বছর বিশেষ সামরিক অভিযানের নামে ইউক্রেনে কয়েক হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে মস্কো। এর পর থেকেই জ্বালানি সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টি ক্রমেই প্রবল হয়ে উঠছে। দ্রুজবা পাইপলাইনের দক্ষিণ শাখাটি হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও চেক রিপাবলিকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে।
হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ায় ইউরালের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনে থাকে এমওএল। চলতি মাসে হাঙ্গেরির কোম্পানিটি দ্রুজবা পাইপলাইনের মাধ্যমে নয় লাখ টন ইউরাল জ্বালানি তেল কিনতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। যেখানে মে মাসে এর পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৫০ হাজার টন।
কাখোভকা জলবিদ্যুৎ বাঁধ ধ্বংসের ঘটনাকে উল্লেখ করে একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি ইউক্রেনে যুদ্ধ গুরুতর আকার ধারণ করেছে। অনেক বড় অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে এখনই আরো বেশি জ্বালানি তেল মজুদ করাকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। তবে বাঁধ ধ্বংসের ঘটনায় রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অন্যকে দোষী আখ্যা দিয়েছে।
চেক রিপাবলিকের ইউনিপেট্রোল রিফাইনার চলতি মাসে ৪ লাখ ৩০ হাজার টন ইউরাল কিনবে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা। পোল্যান্ডের পিকেএন অরলেন এটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান। মে মাসে কোম্পানিটি চার লাখ টন ইউরাল কিনেছিল।
এমওএলের এক মিডিয়া মুখপাত্র জানান, দ্রুজবা পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত হাঙ্গেরিতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। সামনের মাসগুলোয় যেন কোনো সমস্যা না হয় সে আশাই করা হচ্ছে। তবে মাসিক ক্রয়ের বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দেননি। অন্যদিকে পিকেএন অরলেন জ্বালানি তেল কেনা ও চুক্তির বিষয়ে কোনো মন্তব্য প্রদানে অপারগতার কথা জানায়।
ডিসেম্বর থেকে ম্যারিটাইম রুটের মাধ্যমে রাশিয়ান জ্বালানি তেল কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ। তবে ক্রিটিক্যাল ফিডস্টক হিসেবে হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও চেক রিপাবলিককে রাশিয়ান জ্বালানি তেল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। যদি দ্রুজবা পাইপলাইন বন্ধ করে দেয়া হয়, তাহলে দেশগুলো শোধনাগারের জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি তেল মজুদ করতে পারবে না। গত নভেম্বরে একটি পাওয়ার স্টেশনে গোলাগুলি ও হামলার ঘটনায় দক্ষিণ দ্রুজবা পাইপলাইনের একটি অংশের মাধ্যমে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। রাশিয়ান বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, পাইপলাইনের কিছু অংশ ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেলারুশ ও ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে দ্রুজবা পাইপলাইনের অবস্থান এবং এটি দুই দেশের আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করে।