শনিবার (১৭ জুন) ঢাকায় উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে বাজেট পর্যালোচনা গোল টেবিল বৈঠকে এমন মতামত দিয়েছেন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন গবেষকরা।
রাজধানীর বাংলামোটরে উন্নয়ন সমন্বয় কার্যালয়ের খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এ গোল টেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
গোল টেবিল বৈঠকে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. এম. এম. আকাশ, বিআইজিডির সিনিয়র ফেলো অব প্র্যাকটিস ড. মাহীন সুলতান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. এ. কে. এনামুল হক, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এস. এম. জুলফিকার আলী, ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহম্মেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়নের অধ্যাপক ড. এম. আবু ইউসুফ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. রুমানা হক, বিআইজিডির ভিজিটিং ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব এবং বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর।
প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষায় মোট বাজেটের ১৬.৫৮ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলা হলেও এ বরাদ্দ থেকে সরকারি পেনশন ও উন্নয়ন প্রকল্প বাবদ বরাদ্দ বাদ দিলে সামাজিক সুরক্ষার অংশ কমে দাঁড়ায় ১১.৬ শতাংশ। বিদ্যমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বাজেটে নগর অঞ্চলের দরিদ্র ও কম আয়ের মানুষের জন্য নতুন কোনো সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি না থাকাটা অস্বাভাবিক বলে মনে করেন আলোচকেরা।
সামাজিক সুরক্ষা প্রসঙ্গে ড. এ. কে. এনামুল হক বলেন, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের একটি শর্ত হলো সার্বজনীন পেনশন স্কিম। কিন্তু এটি পরিকল্পনায় থাকলেও বাস্তবায়নে ধীর গতি হতাশাজনক।
ড. রুমানা হক বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ পাঁচ শতাংশের আশপাশে আটকে আছে বহু দিন। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবা বাবদ ব্যয়ের চাপ বাড়ছে জনগণের ওপর।
সমাজে যারা বিত্তবান তাদের কাছ থেকে বেশি কর আহরণের পরিবর্তে করযোগ্য নন এমন মানুষের কাছ থেকে আয়কর রিটার্ন বাবদ টাকা আদায়ের চেষ্টা এবং প্রত্যক্ষ করের চেয়ে পরোক্ষ করের ওপর বেশি নির্ভরতার কারণে বাজেটের কর প্রস্তাবগুলোকে আরও গণবান্ধব করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন ড. জুলফিকার আলী।
জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট বাস্তবায়নের আহ্বান জানান ড. নাজনীন আহম্মেদ।
সভাপতির বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, আপদকালীন বাস্তবতার নিরিখে আসছে অর্থবছরের জন্য সরকারি আয়-ব্যয়ের একটি চ্যালেঞ্জিং পরিকল্পনা হিসেবেই প্রস্তাবিত বাজেটকে দেখতে হবে। একইসঙ্গে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাম্প্রতিককালের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অর্জনগুলো যে শক্তি জোগাবে সেটিও মনে রাখতে হবে।
অর্থসংবাদ/এসএম