২০১৩ সালে ব্র্যাকের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে গোল প্রোগ্রাম। এটি খেলাধুলা-ভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে নারীদের জন্য অর্থনৈতিক শিক্ষা ও স্বাধীনতা, যোগাযোগ দক্ষতা, ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ আত্মবিশ্বাস অর্জনে বিভিন্ন মডিউলের মাধ্যমে সাহায্য করে থাকে। গোল প্রোগ্রামের সহযোগিতায় প্রায় ৫০,০০০ সুবিধাবঞ্চিত নারী জ্ঞান, দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করে নিজ নিজ সাম্প্রদায়িক কল্যাণে ভূমিকা রেখেছে।
গোল প্রোগ্রাম সোনিয়া’র জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। ‘বি ইওরসেল্ফ’ এবং ‘বি এম্পাওয়ার্ড’ মডিউলের মতো সেশনগুলো সোনিয়াকে তার অধিকার সম্পর্কে জানতে, যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতে এবং সাম্প্রদায়িক সক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন করে তুলেছে। সে এখন শিক্ষকের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতই নির্দ্বিধায় নিজের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে পারছে। সেশনের মাধ্যমে এখন সে নিজে বা তার সমবয়সী কেউ হয়রানিমূলক পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের দশ বছরব্যাপী এই প্রচেষ্টায় বদলে গেছে জান্নাতুল ফেরদৌস জুয়েনা’র জীবন। আর্থিক অস্বচ্ছলতার সম্মুখীন হলে জুয়েনা গোল প্রোগ্রামের অর্থ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেশনগুলোতে অংশগ্রহণ করে। সেখানে ‘বি মানি স্যাভি’ মডিউলের মাধ্যমে সে নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলে এবং ফাইন্যান্সিয়াল ওয়েলনেস সম্পর্কে মনোযোগি হয়। প্রোগ্রামের ‘বি হেলদি’ মডিউলের সেশনগুলো দেশব্যাপি নারীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বুঝতে এবং যত্ন নিতে সাহায্য করছে।
এ প্রসঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, ব্র্যান্ড আন্ড মার্কেটিং বিটপী দাশ চৌধুরী বলেন, গত দশ বছরে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি প্রমাণ করে নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিতের মাধ্যমে শুধুমাত্র তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত নয়, তাদের পরিবারের এবং সমাজের কল্যাণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সার্বিক উন্নতির পথে নিয়ে যায়। গোল প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হল সুবিধাবঞ্চিত নারীদের নিকট সাহায্য পৌঁছানো, খেলাধুলা ভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষতামূলক শিক্ষা প্রদান, সাম্প্রদায়িক ও জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে সক্ষম করে তোলা।
পরিবার ও সম্প্রদায়কে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে জ্ঞান, দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস অর্জনে কিশোরীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে গোল প্রোগ্রাম। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত গোল প্রোগ্রাম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতপ্রাপ্ত একটি গ্লোবাল মুভমেন্টে পরিণত হয়েছে, যা ২০টিরও বেশি দেশে কাজ করছে। এটি আর্থিক শিক্ষা, যোগাযোগ দক্ষতা, স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা, আত্মবিশ্বাস, কর্মসংস্থান এবং সাইবার নিরাপত্তার মডিউল প্রদান করে। যাতে করে নারীরা নিজেদের পাশাপাশি পরিবার এবং বন্ধুদের জীবনে পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে৷ প্রোগ্রামটির লক্ষ্য ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ ১০ লক্ষ কিশোরীদের নিকট পৌঁছানো।
বিগত বছরগুলোয় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের কমিউনিটি এনগেজমেন্ট এবং সাস্টেইনেবিলিটি উদ্যোগগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন; লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ; স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থিক জ্ঞান উন্নয়ন; কৃষি উদ্ভাবনে সাহায্য; খেলাধুলা, শিল্পকলা, সাংস্কৃতিক প্রচার; এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে ভূমিকা রেখে আসছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের ফিউচারমেকারস প্রোগ্রামটি পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষিত, উপার্জনক্ষম ও স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’র (এসডিজি) ১৭ টি লক্ষ্য অর্জনে ব্যাংকের সকল প্রকল্প ও উদ্যোগগুলো ভূমিকা রাখবে।
অর্থসংবাদ/এসএম