ডব্লিউইএফএর ২০২২ সালের ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ’ প্রতিবেদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৭১তম ছিল। তার আগের বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৬৫তম। ২০২০ সালে ছিল ৫০তম অবস্থানে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর বাংলাদেশের অবস্থানের ১২ ধাপ উন্নতি ঘটেছে। এর ফলে বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৬৫তম স্থানে উঠে এসেছে। ডব্লিউইএফের এই তালিকায় ২০১৪ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।
অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়ন— এই চার মাপকাঠির ভিত্তিতে প্রত্যেক বছর এ সূচক প্রকাশ করে ডব্লিউইএফ। মঙ্গলবার (২০ জুন) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামগ্রিক লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ৭২ দশমিক ২ শতাংশ; যা দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি।
ডব্লিউইএফের এই সূচকে প্রত্যেকটি দেশের অবস্থান নির্ধারণ করা হয় ১ স্কোরের ভিত্তিতে। কোনও দেশ ১ স্কোর পেলে সেই দেশে নারী-পুরুষ সমঅধিকার শতভাগ, আর শূন্য পেলে একেবারে অধিকার বঞ্চিত হিসাবে ধরে নেওয়া হয়।
সূচকে এ ব্ছর বাংলাদেশের মোট স্কোর শূন্য দশমিক ৭২২, যা গত বছর ছিল শূন্য দশমিক ৭১৪। ২০০৬ সাল থেকে নারী-পুরুষ লিঙ্গ সমতা সূচক প্রকাশ করে আসছে ডব্লিউইএফ। ওই বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল শূন্য দশমিক ৬২৭।
এবারের এই সূচকে ২০২২ সালের মতো শীর্ষ স্থানে রয়েছে আইসল্যান্ড। দেশটির স্কোর শূন্য ৯১২। আর সূচকের একেবারে তলানিতে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। বিশ্বে নারী-পুরুষের সমতা সূচকে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের এই দেশটির স্কোর শূন্য দশমিক ৪০৫।
আইসল্যান্ডের পরই শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় আছে নরওয়ে (দ্বিতীয়), ফিনল্যান্ড (তৃতীয়), নিউজিল্যান্ড (চতুর্থ), সুইডেন (পঞ্চম), জার্মানি (ষষ্ঠ), নিকারাগুয়া (৭ম), নামিবিয়া (৮ম), লিথুয়ানিয়া (৯ম) ও বেলজিয়াম (১০ম)।
বৈশ্বিক এই লিঙ্গ সমতা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার নিচে রয়েছে আফগানিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের পরই নারী-পুরুষের বৈষম্য কম রয়েছে ভুটানে। দেশটির অবস্থান ১০৩তম। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ১১৫, নেপাল ১১৬, মিয়ানমার ১২৩, মালদ্বীপ ১২৪, ভারত ১২৭, পাকিস্তান ১৪২তম স্থানে রয়েছে।
এই হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ায় নারী-পুরুষের ব্যবধান বাংলাদেশেই সবচেয়ে কম রয়েছে। উন্নত বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় সূচকে অনেক দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকলেও লিঙ্গ সমতায় চীন (১০৭তম), জাপানের (১২৫তম) চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
নারীর ক্ষমতায়নের সূচকে ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ স্কোর নিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ডব্লিউইএফ বলছে, বাংলাদেশে গত ৫০ বছরের মধ্যে ২৯ দশমিক ৩ বছর রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন নারী। যা বিশ্বে দীর্ঘসময় ধরে কোনও দেশের নারীর শাসনাধীন থাকার রেকর্ড। তবে বাংলাদেশে মন্ত্রী পদে নারীর দায়িত্ব পালনের হার মাত্র ১০ শতাংশ এবং সংসদীয় অবস্থানে এই হার ২০ দশমিক ৯ শতাংশ।