সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। এই অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার।
দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা হিসাবে)।
সোমবার (৩ জুলাই) প্রবাসী আয়ের এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে জুন মাসের প্রবাসী আয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জুন মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছে ২১৯ কোটি ৯৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
দেশে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় আসে করোনাকালে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। সেই সময় সঞ্চয়ের প্রায় পুরোটাই দেশে পাঠান প্রবাসীরা। একই সময়ে বিদেশ থেকে দেশে আসা মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়।
পরের বছর ২০২১-২২ অর্থবছরে কিছুটা কমে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। ওই অর্থবছরে প্রবাসীদের কর্মে ফেরত যাওয়ার সংখ্যা বাড়ে। প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারাকে ধরে রাখতে নানারকম আলোচনা যেমন বাড়ে, নেওয়া হয় নানা উদ্যোগও। প্রণোদার হার বৃদ্ধি, প্রবাসীদের সম্মানাও দেওয়া শুরু হয়। বৈধভাবে প্রবাসী আয় পাঠানো সহজ করা হয়। তারপরও প্রবাসী আয় কমতে থাকে।
সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আবারও ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করে প্রবাসী আয়। এই অর্থবছরের এক মাসে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পায় তো পরের মাসে কমে যায়। তাৎক্ষণিক কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়; বিশেষত ডলারের বিপরীতে টাকার হার বৃদ্ধি করে। এক বছরের ব্যবধানে ডলার বিপরীতে টাকার হার বৃদ্ধি করা হয় প্রায় ২৫ শতাংশ। এতে হুন্ডি কারবারীর লাগাম টানা হয়, প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানো শুরু করেনে। বৃদ্ধি পায় প্রবাসী আয়। বছর শেষে প্রবাসী আয় দাঁড়ালো ২ হাজার ১৬১ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। এটা দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়।
২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের মাস ভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সারা বছর প্রবাসী আয় সমানভাবে আসেনি। জুলাই মাসে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার; আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এই দুই মাস প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকে। তারপরই কমে যায়।
সেপ্টেম্বরে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার; অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার; নভেম্বরে ১৫৯ লাখ ৫২ লাখ ডলার; জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৯ লাখ মার্কিন ডলার; ফেব্রুয়ারি ১৫৬ কোটি ডলার।
এরপর মার্চ মাসে ২০২ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার; এপ্রিল মাসে ১৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ডলার; মে মাসে ১৬৯ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার এবং সর্বশেষ জুন মাসে আসে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার।
অর্থসংবাদ/এসএম