ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত মডার্ন সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে কয়েক কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি পূরণে ডিএসইর কাছে তিন মাস সময় চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মডার্ন সিকিউরিটিজ লিমিটেডের (ট্রেক-২২৯) সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে (সিসিএ) ৫ কোটি ২৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘাটতি পাওয়া গেছে। তবে, ব্রোকারেজ হাউজটির পক্ষ থেকে ডিএসইকে জানানো হয়েছে, তাদের ব্যবহৃত ব্যাক অফিস সফটওয়্যারটিতে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এ কারণে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে বেশি পরিমাণ ঘাটতি দেখাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের ঘাটতি পূরণ করতে মডার্ন সিকিউরিটিজ তিন মাস সময় চেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
তথ্য মতে, দেশের পুঁজিবাজারে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ করেছে এবং বন্ধ হয়েছে। এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) সব ব্রোকারেজ হাউজ পরিদর্শন ও তদন্তের নির্দেশনা দেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই ধারাবাহিকতায় তদন্ত সাপেক্ষে ১০৮টি ব্রোকরেজ হাউজে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ৫৮৫ কোটি টাকার বেশি ঘাটতি পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১০২টি প্রতিষ্ঠান তাদের ঘাটতি সমন্বয় করেছে। তবে, এখনও ৬টি ব্রোকারেজ হাউজ তাদের ঘাটতি বাবদ ৪৯ কোটি টাকার বেশি সমন্বয় করেনি। এর মধ্যে মডার্ন সিকিউরিটিজ অন্যতম।
প্রতিষ্ঠানটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি আছে ৫ কোটি ২৭ লাখ ২৯ হাজার টাকার। ব্রোকারেজ হাউজটি শেয়ার লেনদেনের হিসাব রাখতে ব্যাকঅফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করত। ওই সফটওয়্যারে ত্রুটি দেখা দিয়েছে বলে দাবি করছে মডার্ন সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় ঘাটতি পূরণ করতে তিন মাস সময় চেয়ে ডিএসই’র কাছে আবেদন জানিয়েছে। ডিএসই’র পরিদর্শনদল চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে। ওই বছরের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত তাদের গ্রাহক হিসাবে ৫ কোটি টাকার বেশি ঘাটতি খুঁজে পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের সফটওয়্যার সমস্যাটি পরীক্ষা করে সমাধানের জন্য তিন মাস সময় দেওয়ার জন্য গত ২৬ জুন ডিএসই’র কাছে আবেদন করেছে। এ বিষয়টি ডিএসই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে অবহিত করেছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান ১০৮টি ট্রেকহোল্ডার বা ব্রোকারেজ হাউজের মধ্যে ১০২টি তাদের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের ঘাটতি সমন্বয় করেছে। বাকি ৬টি প্রতিষ্ঠান তাদের ঘাটতি এখনও সমন্বয় করেনি। এর মধ্যে সিনহা সিকিউরিটিজের ঘাটতি আছে ৯ কোটি ৮২ লাখ ২৪ হাজার টাকা, ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডের ঘাটতি ১ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা, পিএফআই সিকিউরিটিজের ঘাটতি আছে ৩৩ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, এশিয়া সিকিউরিটিজের ঘাটতি আছে ৬২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা এবং লতিফ সিকিউরিটিজের ঘাটতি রয়েছে ৩২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।
এর আগে বিএসইসি গত বছর ২২ মার্চ গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে আছে স্টক এক্সচেঞ্জকে লিমিটি সুবিধা স্থগিত করা হবে, যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসাবে আইপিও কোটা সুবিধা বাতিল হবে, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানার বিপরীতে পাওয়া লভ্যাংশ স্থগিত থাকবে এবং ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারীর নিবন্ধন এবং নতুন শাখা ও বুথ খোলা বন্ধ রাখা হবে।
এর আগে গত বছর ২১ মার্চ বিনিয়োগকারীদের আমানত অর্থাৎ শেয়ার ও অর্থ সরিয়ে নেওয়া তামহা সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ এবং বানকো সিকিউরিটিজসহ ২৫টি ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন সনদ নবায়ন বন্ধসহ নানা সুযোগ-সুবিধা স্থগিত করা হয়।
অর্থসংবাদ/এসএম