পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মা সেতুতে চলন্ত গাড়ি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইলেক্ট্রনিক টোল সিস্টেম (ইটিসি) কার্যক্রম চালু হয়েছে।
সেতু বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বুধবার সকালে সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় তৈরি করা স্মার্ট বুথের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে এই টোল আদায় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই পদ্ধতিতে সেতুর দুই প্রান্তে একটি করে দুটি লেনে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশনের (আরএফআইডি) মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে টোল আদায় হবে। এতে নগদ টাকা লেনদেন করতে হবে না এবং টোল প্লাজায় থামাতে হবে না কোনো যানবাহন।
রেজিস্ট্রেশন করা যেকোনো যানবাহন টোল প্লাজার সামনে এলেই রোবটিক ক্যামেরার মাধ্যমে যানবাহন শনাক্ত করে অটোমেটিক টোল আদায় করা হবে। এতে সময় লাগবে ২-৩ সেকেন্ড।
সেতু সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন বলেন, টোল আদায়ের দায়িত্বে থাকা কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন বুথ স্থাপন করেছে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে টোল পরিশোধের জন্য যানবাহনের উইন্ডশিল্ডে লাগাতে হবে বিশেষ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) কার্ড। ফাস্ট ট্র্যাকের মাধ্যমে এই প্রি-পেইড কার্ড থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল কেটে নেবে অটোমেটিক টোলিং সিস্টেমে। ডিজিটাল পেমেন্টের জন্য যানবাহনে অবশ্যই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অনুমোদিত আরএফআইডি ট্যাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আপাতত এই টোল আদায় কার্যক্রম পরীক্ষামূলক চলবে। শিগগিরই পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হবে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে পদ্মা সেতুতে এখন থেকে টোল আদায় আরও দ্রুত ও সহজ হবে। ট্রায়াল শেষে এর রেজাল্টের ওপর নির্ভর করবে আমরা স্মার্ট লেনের সংখ্যা আরও বাড়াবো কি না।
এসময় তিনি আরও বলেন, যারা ক্যাশ দিয়ে যেতে চাইবে তাদের জন্যও অপশন আপাতত থাকবে। চারটা পদ্ধতি আমরা চালু করার চেষ্টা করছি। সেগুলো হলো ক্যাশলেস, টাচ এন্ড গো, ক্যাশ, ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ডের ব্যবহার।
‘যানবাহনগুলোকে স্মার্ট টোল সিস্টেমের আওতায় আনার উদ্দেশ্যে একটি রেজিস্ট্রেশন বুথ খোলা হয়েছে। যারা এখান থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে চায়, তারা করতে পারবে। প্রথমবারের মতো আমরা দেখলাম এটা কাজ করে কি না। কিছু হয়তো ত্রুটি বের হবে, সেগুলো আমরা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার আগে সংশোধন করে নেবো।’
কারও যদি কার্ড থাকে, সেই কার্ড টাচ করে চলে যেতে পারবে। টোল বুথে তাকে ক্যাশ বা ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট করতে হবে না। এর বাইরেও প্রতিটি বুথে ক্যাশ এবং ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। আমরা চাচ্ছি মানুষ যাতে ক্যাশ ট্রান্সেকশন না করে পদ্মা সেতু পার হতে পারে। কাউকে কোনো ক্যাশ টাকা দিতে হচ্ছে না, দাঁড়াতে হচ্ছে না, স্পিডে যেতে পারছে, আমাদের টোল কালেকশনেও স্বচ্ছতা থাকছে।
পদ্মা সেতুর অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল হায়দার চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আপাতত মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের দুটি বুথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায়ে ইলেক্ট্রনিক টোল সিস্টেম (ইটিসি) এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু হয়েছে। এই কার্যক্রম শুরু করা হয় রাত ১২টা থেকেই।
অর্থসংবাদ/এসএম