বুধবার (৫ জুলাই) মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ করতে চায় ডিএমটিসিএল। এরপর যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় পাওয়া সাপেক্ষে উদ্বোধনের দিন ঠিক করা হবে।
পরীক্ষামূলক চলাচলের প্রথম ধাপ পারদর্শিতা পরীক্ষা বা পারফরম্যান্স টেস্ট। এর পরের ধাপে হবে ‘সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন টেস্ট’। চূড়ান্ত পর্যায়ে হবে ‘ট্রায়াল রান’ বা পরীক্ষামূলক চলাচল। এই তিন ধরনের চলাচলকেই পরীক্ষামূলক চলাচল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আজ বুধবার মেট্রোরেলের প্রকৌশলীরা কয়েক দলে বিভক্ত হয়ে হেঁটে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রেলপথ যাচাই করেছেন। এ সময় পরীক্ষামূলক মেট্রোরেল চলাচল শুরুর ক্ষেত্রে কোনো বাধা, চ্যালেঞ্জ কিংবা কারিগরি ত্রুটি আছে কি না তা দেখেছেন কর্মকর্তারা। এর ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার কারিগরি কমিটির সঙ্গে বৈঠক হবে। কোনো বাধা থেকে থাকলে বৈঠকে সমাধান করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা বলছেন, মেট্রোরেলের চলাচলের পথে বাধা নেই। যাচাই করা এক ধরনের আনুষ্ঠানিকতা। কারিগরি কমিটিও আনুষ্ঠানিকতা মেনে বৈঠক করে পরীক্ষামূলক চলাচলের দিনক্ষণ ঠিক করবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেল চলাচল করছে। এই সময় পরীক্ষামূলক চলাচল সম্ভব নয়। তাই রাতে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে পরীক্ষামূলক চলাচল হবে।
এখন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উত্তরা-আগারগাঁও পথে মেট্রোরেল চলাচল করে। আগামী শনিবার থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলাচল করবে। এরপর ট্রেনগুলো ডিপোতে যাওয়া, স্টেশনের হিসাব-নিকাশ শেষ করে পরীক্ষামূলক চলাচল রাত ১০টা থেকে শুরু হতে পারে, চলবে ভোর পর্যন্ত।
শুরুতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। পরে তা কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুসারে, গত জুন পর্যন্ত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৯৫ শতাংশের কিছু বেশি। মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি সাড়ে ৭ শতাংশ।
মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।