জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আঙ্কটাডের ‘ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট-২০২৩’-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বিশ্বব্যাপী প্রতিবেদন প্রকাশ করে আঙ্কটাড।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে সর্বোচ্চ ৩৬১ কোটি ডলারের এফডিআই আসে ২০১৮ সালে। এরপর কমতে থাকে এফডিআই। পরের বছর ২৮৭ কোটি ডলার, ২০২০ সালে তা আরো কমে ২৫৬ কোটি ডলারে ঠেকে। ২০২১ সালে তা কিছুটা বেড়ে ২৮৯ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। ২০২২ সালে তা আরো বেড়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এফডিআই বিনিয়োগের রেকর্ড গড়ে।
এদিকে ২০২২ সালে এফডিআই স্টক দাঁড়ায় ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলার, যা আগের বছর ছিল ২ হাজার ১৫৮ কোটি ডলার। ১২ বছর আগে এফডিআই স্টক ছিল ৬০৭ কোটি ডলার। এর বিপরীতে এফডিআই স্টক কমেছে ৪০ কোটি ডলার। ২০২১ সালে এফডিআই স্টক কমেছিল ৩৯ কোটি ডলার। স্টক কমার এ হার ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২ সালে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশগুলোয় বৈদেশিক বিনিয়োগ ১৬ শতাংশ কমেছে। ২০২১ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার থাকলেও তা কমে এবার দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০০ কোটি ডলারে। নিম্নমধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পেরেছে বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশ। দেশগুলো হলো ইথিওপিয়া, কম্বোডিয়া, সেনেগাল ও মোজাম্বিক। বাংলাদেশ এর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
বিনিয়োগ আকর্ষণে এগিয়ে থাকলেও নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণে কম্বোডিয়া ছাড়া অন্য দেশগুলো পিছিয়ে রয়েছে। নতুন প্রকল্প আকর্ষণে শীর্ষে রয়েছে লাওস, নাইজার, তানজানিয়া ও সুদান। অন্যদিকে গ্রিনফিল্ড খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থান এবার বাংলাদেশের। এ খাতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে তানজানিয়া। সেনেগাল, কম্বোডিয়া, রুয়ান্ডাও এ তালিকায় রয়েছে। এশিয়ার নয়টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে ২ শতাংশ। ৩৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ নিয়ে কম্বোডিয়ার প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ। গ্রিনফিল্ড প্রকল্পের সংখ্যা এবং মূল্যবৃদ্ধির কথা থাকলেও ২০২২ সালে এ খাতে বৈশ্বিক বিনিয়োগ বিগত বছরগুলোর মতোই ছিল। এ হারকে হতাশাজনক বলে মন্তব্য করছে আঙ্কটাড। অন্যদিকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে লক্ষ্য করে আন্তর্জাতিক প্রকল্প অর্থায়ন কমেছে ৯ শতাংশ, যার মূল্য ২ হাজার কোটি ডলার। এশিয়ার উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ৪০ শতাংশ প্রকল্পই ভারত, ভিয়েতনাম ও তাইওয়ানে। এদিকে বাংলাদেশের পেটেন্ট বিল-২০২২ বাস্তবায়নকে ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে দেখছে আঙ্কটাড। এর মাধ্যমে ১৬ থেকে ২০ বছরের জন্য পেটেন্ট সুরক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করছে সংস্থাটি।