বুধবার (১২ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বৈঠকের ফলাফলের ওপর এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ার কোম্পানি পেরিন্টিস আকাল এসডিএন বিএইচডি দীর্ঘমেয়াদে এলএনজি সরবরাহ করবে। আর পেট্রোবাংলা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ (বিশেষ) আইন-২০১০-এর অধীনে এটি কিনবে।’
অনলাইনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তবে পেট্রোবাংলার পক্ষে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ যে প্রস্তাব দিয়েছে তার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করা হবে।
নতুন এই প্রস্তাবের মাধ্যমে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে এলএনজি আমদানিতে তৃতীয় দেশ হিসেবে মালয়েশিয়াকে বেছে নিয়েছে।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল হিসেবে পরিচিত দু’টি ফ্লোটিং স্টোরেজ এবং রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) স্থাপনের পর ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ কাতার এবং ওমান থেকে এলএনজি আমদানি করে আসছে। এছাড়া, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করে দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাচ্ছে।
পেট্রোবাংলার এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, মালয়েশিয়ার কোম্পানিটি ১৫ বছরের চুক্তির আওতায় বছরে এক এমটিপিএ (বার্ষিক মিলিয়ন টন) এলএনজি সরবরাহ করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভা কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের পর আমরা বিস্তারিত জানাতে পারব।’
বিদ্যমান চুক্তির পাশাপাশি ২০২৬ সাল থেকে আগামী ১৫ বছরের জন্য বার্ষিক অতিরিক্ত দেড় মিলিয়ন টন বার্ষিক (এমটিপিএ) এলএনজি পেতে বাংলাদেশ ১ জুন কাতারের সাথে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান থেকে আরো এলএনজি আমদানির জন্য ২০ জুন আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ।
নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ওমানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ওকিউটি ২০২৬ সাল থেকে ১০ বছরে বাংলাদেশে ০.২৫ থেকে ১.৫ মিলিয়ন টন বার্ষিক (এমটিপিএ) এলএনজি সরবরাহ করবে। তবে চুক্তির কোনো মূল্য বা আর্থিক বিবরণ অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা হয়নি।
বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে ঘন ঘন দামের ওঠানামার কারণ রোধে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ এলএনজি আমদানি বাড়াতে মরিয়া হয়েছে। এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এলএনজি সরবরাহের জন্য মালয়েশিয়ার কোম্পানিকে বেছে নেয়া হয়েছে।
দেশের চার হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে মোট প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন হয় প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এতে ঘাটতি থাকে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। মোট উৎপাদনের মধ্যে ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট আমদানি করা হয়, যেখানে দেশে স্থানীয়ভাবে দুই হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হয়।